....

পুলক বড়ুয়ার কবিতা ‘সম্পন্ন সময়’


হে ভবিতব্য তাকাও, তাকিয়ে দেখ
আমার ফেলে আসা দিন-রাত্রি, ধাবমান
রাত্রিদিন, বিগত ও বহমানতা

সত্বা
   নগ্ন, পেছনে
প্রত্নস্মৃতি
সমুখে অবারিত দ্বার
     খোলা বাতায়ন
          আসন্ন অনাগত এক

হে আগামী আমার
    কেবল কালের ধুলো ওড়াও
         শুধু কালের ধুলো সরাও
আমাকে হেঁটে যেতে দাও

আমি হেঁটে যাবো
পূর্বজন্ম, পুনর্জন্ম, পুনর্জীবন থেকে
জন্মজন্মান্তরের দিকে, পূর্বসূরিদের প্রতি
এই চিন্ময় পাকা-পিচঢালা পথ পিছে ফেলে
রেখে মৃন্ময় কাঁচা পথ দিয়ে এক
সুনিবিড় শান্ত-সৌম্য-ছায়ানীড়
বিপুল বিন্যাসে
আমার পূর্বপুরুষের ভিটেমাটির ক্রোড়ে
অফুরান ধান, জলভরা আমিষের কাছে
মননের শ্যামলী কালক্রম ষড়‌ঋতুর সৃজনকলাপটে
একান্ন পূর্ণপ্রাণ
বাঁশ-খড়-মেঠো কুঞ্জের গীতিময় নিকুঞ্জে
কাকডাকা ভোর পেরিয়ে, দিনান্তে, গোধূলি ও
সাঁঝবেলাশেষে, রাত্তির নামতেই
গহন গহিন নিশীথ
নির্জন নিঝুম শিয়র—হাতছানি দেয় আমাকেই
সুরভিত সুখী-সুর আমোদিত
সহজিয়া নিভৃত নিলয়ে

গাঁয়ের প্রাচীনগণ প্রবীণ মহীরুহের মতোন
ছায়ায় কায়ায় শান্ত-দাওয়ায়
বয়েসী মনের স্মৃতির-তাওয়ায় এক
সাধসত্র ধরে আছেন
(আমি অবুঝ শিশুর মতো হামাগুড়ি দিয়ে) তার
কাছে পৌঁছুতে চাই
গঞ্জের পাশ দিয়ে ফিরে ফিরে কুলুকুলু
শব্দে ছুট একূল ওকূল
দুকূল ছাপিয়ে এপার ওপার পাড়ি যেন
নদী ও নারী একটিমাত্রায় বিম্বিত
আদি ও অনন্ত : এঁকেবেঁকে যাওয়া
কলসী কাঁখে এক কন্যে
আমার নয়ননৌকায় নিশিদিন
ওঠানামা করে যায়
শৈশবের কলরবের মতো
ভোর কচিকাঁচার মতো
কিচিরমিচির পাখির শব্দ—দুই
মিলেমিশে ভাঙা ঘুম, আহা
বেলা অবসানে অবসর
পুঁথি-পুরাণ-উপকথা
আরণ্যক-আহ্লাদে আটখানা

মন মজে পড়ে রয়, পাড়াগাঁয়
সম্পন্ন সময়ে সমর্পিত সত্বা আমার ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ