পিতু একজন ক্ষুদ্র বর্গাচাষি। তার কাছে ভালোবাসা মানে জমিতে কম খরচ করে বেশি ফসল পাওয়া।এক মৌসুমের ধান বিক্রি করে এক টুকরা জমি কেনা। যখন সোনার ফসলে রোদ্দুর ধান উকি দেয় তখন পিতুর বুকটা ভালোবাসায় ভরে উঠে। পিতুর জমির ফসল কে ভালোবাসা ছাড়া আরও একজন ভালোবাসার মানুষ রয়েছে। সে ববিতা। সারা দিন জমিতে কাজ করে ক্লান্ত শরীরে পিতু যখন ধরবন্ধু মোড়ের বস্তিতে ফিরে তখন মাঝে মাঝে ববিতা ও তার মায়ের সাথে দেখা হয়।ববিতাকে দেখার জন্য রাস্তার ধারের পাবলিক টিউবকলে পিতু গোসল করতে যায়। পিতুকে দেখেই ববিতার মা বলে উঠে কি পিতু বিয়া থা করবা না? একা একা আর কতদিন থাকবা। এবার একটা বিয়া করো। তোমার মায়ের খুব ইচ্ছে আছিলো, তোমার বউ কে দেখে যাওয়ার, কিন্তু তার তো সে ভাগ্য হলো না।পিতু ববিতার দিকে তাকিয়েই উত্তর দেয়, এই বছর ফসল ভালো হয়েছে চাচি, এইবার ফসল ঘরে তুলেই বিয়ে করতে চাই, আপনারা মেয়ে দেখেন। তার পর ববিতার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, ববিতা কেমন আছ?
ববিতা উত্তর দেয়, অসুখ। পিতু এর আগেই যতবার তাকে এ কথা জিজ্ঞাসা করেছিলো ততদিনেই ববিতা একই উত্তর দিয়েছে।
ছোটবেলা থেকেই ববিতার অসুখ। পেটের পীড়া। ববিতার বাবাও এই পেটের পীড়া নিয়ে একদিন মাঝ রাত্রীতে চিৎকার দিতে দিতে মারা গেছে। পিতু মনে মনে ভাবে ববিতা মেয়েটি বড়ই অভাগা। নাহলে তার মতো গরীব মানুষের এতো বড় অসুখ করবে কেন? হয়তো প্রকৃতি অস্বাভাবিকত্ব সহ্য করতে পারে না, তাই। প্রিয় পাঠক আপনাদের মনে হতে পারে পিতু এখানে অস্বাভাবিকত্ব কোথায় পেলো। ধরবন্ধু মোড়ের বস্তিতে যে ববিতার বাস, তার এরকম অদ্ভুদ সুন্দর হওয়াটা অস্বাভাবিক নয় কি?
1 মন্তব্যসমূহ
এই মন্তব্যটি একটি ব্লগ প্রশাসক দ্বারা মুছে ফেলা হয়েছে।
উত্তরমুছুনঅস্বাভাবিক মন্তব্যের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।