....

আরিফ ইশতিয়াক এর কবিতা | দিব্যক




প্রতিক্রিয়া


মাঝে মাঝে এমনও ভাবি- মস্তিষ্কই
বুঝি আমার সকল যন্ত্রণার আঁধার।
নির্বুদ্ধি প্রাণী হলে দেখতাম, ভুলে যেতাম।
মানুষ হয়েছি বলে দেখার সাথে সাথে
চিন্তা শুরু হয়। চিন্তার একেকটা কাঁটাযুক্ত গাছ
বাড়তে থাকে আমার হৃদয়ে, কাঁটার আঁচড়ে
বুকে ক্ষতের সৃষ্টি হলে চেতনার ক্রিয়ায়
সাধ্যমত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করি।

দুষ্টু ছেলের দল শালিকের বাসা ভেঙে
বাচ্চা নেয়ার সময় মা শালিকের
বিহ্বল ছোটাছুটি আর ব্যাকুল চিৎকার
আমার স্মৃতিতে ভাসলে আজও আমি
আঁতকে উঠি। তাহলে দেশমাতার এ করুণ ক্রন্দনে
আমি বিচলিত হব না কেন?




বিবর্তন


বৃষ্টি এলেই স্মৃতির খোপঘরে
ঝিম ধরে থাকে এক মায়াবী কবুতর।
এই পায়রাকে আমি চিনি,
এককালে বড় চঞ্চলা ছিল সে,
শান্তির দূত ছিল সে।
খেলতো, উড়তো, সব পাখির মতই
সন্ধ্যা হলে ঘরে ফিরতো।
আমার প্রেমকাতুরে চিঠি
পৌঁছে দিতো তোমার করিডোরে।
আমি লিখতাম, 'বৃষ্টি কী?'
তুমি লিখতে, 'আকাশের কান্না।'
আমি লিখতাম, 'আর কিছু?'
লিখতে, 'আমার হাসি, তোমার হাসি।'
আর এখন -
আকাশ কান্না করলে ফসল হাসে,
আর আমি কান্না করলে তুমি!




সেই ঘরে এসো


এভাবে ভাসবো বলে ছাড়িনি তোমার কূল,
নদী নারী না হলেও নারী বহমান নদী;
ভেবে, না ভেবেই ফেঁদেছি যদিও ভুল
লিখব তোমার নামেই কাব্য ফের— ধ্রুপদী।
এই অসময়ে এক অলীক অনুকূল ঢেউ
খুঁজে দেয় যদি তোমার করতলের মতো চর,
সেই চরেই পাতবো ঘাঁটি মাতাল ঝড় এলেও
মৃত্তিকা আর ডালপালায় বাঁধবো আদিম ঘর।

সেই ঘরে এসো, এসো আবার প্রেমের নাম করে
মাখবো চরের বালি কামুক উদোম গায়ে,
সেই চরে এসো, এসো আবার কামের নাম করে
চিনবো আবার তোমায় ভিন্ন পরিচয়ে।
ভুলে যাও গীবতের নারকী সমাজ,
নদীর ঢেউয়ের শব্দে স্তিমিত বাহাজ।




কবিতার জন্য


আশ্চর্য কিছু কবিতার জন্য জীবনটাকে
দুমড়ে-মুচড়ে দিতে পারি। অথবা
তোমার চুলের মত অরণ্যে
ফেলে আসতে পারি নির্জন নিঃশ্বাস।

কবিতার জন্য ঘুমন্ত বাঘের কানে
খোঁচা দিতে পারি নিঃসংকোচে।
ভয়ের মত বিচ্ছিরি কোনো নৈঃশব্দ্য
ভেঙে ফেলতে পারি দারুণ হুংকারে।

কবিতার জন্য বেহুলার আর্জির মত
লড়তে পারি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ