....

আহমেদ মওদুদের কবিতা | দিব্যক




ধানসূত্র


ন.

ধার করে মাঠের সবুজ, সবুজাভ শরৎ সকাল। কিছুটা সকাল থেকে কিছুটা শিশির ধার করে ধানের পাতা, একে অন্যের কাছে ঋণী হলো তারা। ঋণগ্রস্ত চাষির দুখে দুখী হলো শারদীয়া মাঠ। মাঠের সবুজ রং চাষি হৃদয়ের প্রতিরূপ। যে হৃদয় হলুদ হলো মাঠের সবুজ ছড়িয়ে ,তার ছবি তোলেনি পর্যটক। ফলে তার ভ্রমণেই ভ্রম, অসম্পূর্ণ পরিযান নিয়ে দূরে যাক তার পরিযায়ী মন। গাঢ় হতে মাঠের সবুজ, দৃপ্ত হোক অকৃত্রিম চাষির ভ্রমণ।


প.

সবুজের মাঝে লাল, বিনীত সকাল, সকল আলোর রেখা ধানের গোছার ফাঁক গলে ফিরে যায় সৌরবিশ্বে পুনরায়। তাতেই সতেজ হয়, সজীব হয়, চিরজীবী হয় লালে লাল, সৌর দুলাল। ফলে ললাটে সৌরটিপ নিয়ে ঘুমাতে যায়, বিস্তৃত, সবুজ ধানক্ষেত, জেগে ওঠে সৌরটিপ নিয়ে। জাগে চাষি বউ, টিপহীন, হীনমন্যতায় ভোগা, ঘুমঘোরে বোবা-কালা, অসাড়, উজবুক স্বদেশ বাসীকে নিয়ে, যারা ঘুমাতে দেয়না তাকে ধানের মৌসুম। মৌসুমি হাওয়া হায়, তবু বয়ে যায়, সবুজ ধানের পাতা ছুঁয়ে।


ফ.

ছাঁয়া খুঁজে নেয়, ধানের গোছায়, খলশে -পুঁটি, মলা-ঢেলা আর সংখ্যালঘু দাঁড়কাক। দাঁড়িয়ে থাকবে তারা পূর্ববর্তী মীন পুরুষের মায়া নিয়ে, ধানের ছাঁয়ায়। ছাঁয়া থেকেই মায়ার উদ্রেক, জানে মীন, জানে মৌসুমি ধান। যেভাবে জানেন চাষি, বীজতলা রোদের কাঙ্গাল, ধানক্ষেত যেভাবে জলের। মীন আর জল আর ধান আর চাষি, অনুযোগহীন এই চার প্রাণ মিলে, পৃথিবী হয়েছে প্রাণময়। প্রাণ ফিরে ফিরে পায় আর গান ধীরেধীরে গায় যারা, তারা কি জানে, ধানের জীবনী চাষির জীবন থেকে অথবা চাষির জীবনী ধানের জীবন থেকে নেয়া। জানেনাতো তারা, না জানুক, তবু তারা ফিরে পাক প্রাণ, চাষির জীবনী থেকে ধার করে ধনঞ্জয়ী ধান।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ