সুবিমলের বাড়ি থেকে ফিরে লিখেছেন: পি বিশ্বাস( Pinak Biswas)
প্রতিষ্ঠানবিরোধী সুবিমল। সুবিমল মিশ্র।
একটা লাইনও কখনো কোনো বাণিজ্যিক পত্রিকায় লেখেননি। সারাজীবন লিখেছেন লিটল ম্যাগাজিনের জন্য। হার্পার কলিন্স যার বই ছাপার জন্য হাপিত্যেশ করে থাকে৷ যার সাথে পত্রালাপ হয় জাঁ লুক গোদারের।
মহেশতলার কাছে পুরোনো আবাসনে দুই কামরার ঘরে প্রায় বন্দী, অসুস্থ। কাজের লোক দেখভাল করে তাঁর৷ নিজের মানুষেরা কবেই ছেড়ে গেছে তাঁকে। ভাল করে কথা বলতে পারেন না। স্মৃতি ধুসর, দৃষ্টি দুর্বল, চলচ্ছক্তিরহিত। যার কলম চলতো চাবুকের মতো, তাঁর পেনসনের সামান্য টাকাটা তুলতে হয় টিপসই মেরে! লেখা তো দূরস্থান কলমই ধরতে পারে না বলিষ্ঠ কথাসাহিত্যিকের হাত।
কাঁপা কাঁপা গলায় জানান 'নাহ আমার সাথে কেউ দেখা করতে আসেনা'।
সোঁদরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে পা ভেঙ্গে, চোখ উপড়ে নিয়ে খাঁচায় বন্দী করে রাখার পরে বাঘ যখন বুঝতে পারে খাঁচার বাইরে সিংহচর্মাবৃত গর্দভ আর শেয়ালেরা সাহিত্যের নামে হুহুংকার করছে তখন সে বলে, আমি বোধহয় আর বাঁচবনা।
চলে আসার আগে অনেক্ষন ধরে থাকেন হাতখানি৷ বলেন, তোমাদের কিছু খাওয়াতে পারলাম না। তার চোখের কোনে তখন চিকচিক করছে জল।
সুবিমল অবহেলিত, বিস্মৃত, অস্তগামী। শেষ লেখাটা লিখে ফেলেছেন, আর কখনো কলম তুলবেন না। কিন্তু তাতে আমার কি? অস্তসূর্যের বিষণ্ণ মাধুরীটাও মুগ্ধ পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
0 মন্তব্যসমূহ
অস্বাভাবিক মন্তব্যের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।