....

Covid Journal এবং দৃশ্যকথা | ইউসুফ বান্না


আমার ভেতরের আঁকিয়ে সত্তাটির কর্মকান্ড দেখে আমি নিজেও মাঝে মাঝে ভড়কে যাই....

মনে আছে, একবার ফেসবুকের এক পোস্টে লিখেছিলাম,  এত মাথা খাটিয়ে সময়, শ্রম, মেধা, রক্ত, মজ্জা জল করে যে লেখাটা লিখলাম, তা চেনা  গণ্ডির মানুষের সাথে শেয়ার করলে তাতে লাইক বা কমেন্ট পড়ে দু'চারটা।

আর হুট করে ইম্পালসের বশে আঁকা কোন ছবি বা ফটোগ্রাফি শেয়ার করলে তার রেস্পন্স পাই টেক্সটের থেকে দশগুন বেশি।

বেশ ক'বছর আগের লেখা এটি।

এরপর সময় ও জীবনের তাগিদে এক্টা প্রচন্ড শংকটের মুখে যখন নিজেকে প্রকাশ করতে গিয়ে শব্দের সাথে শব্দের বুনটে বাক্য গেঁথে পংক্তি তৈরির মত মানসিক স্থিতি ছিলনা, তখন আঁকার থেরাপিউটিক ভ্যালুকে এক্সপ্লোর করতেই একরকম শব্দে কবিতা লেখার বদলে রেখা ও রং দিয়ে কবিতা করার চেষ্টা শুরু করি।

আঁকাআঁকি আমি সবসময়ই করতাম, কবিতা লেখার ফাকে ফাকে সেসব আঁকা সংরক্ষিত আছে কিছু, বেশিরভাগই হাপিশ। 

তখন বলতাম,  কবিতার মত আমি ছবিও লিখি।

কিন্তু রেখা-রং এ কবিতা করতে শুরু করার পর খুব দ্রুত মাধ্যমটিকে নিয়ে কাজ করতে করতে এক্টা মানুষ তার নিজের চারিপাশে গন্ডি কাঁটছে, এরম একটা ছবি এঁকে মনে হল, না, এতে ইউসুফ বান্নার চিত্রভাষ্য পাওয়া যাচ্ছে।

এরপর থেকেই আমি ছবির সাথে আঁকা ক্রিয়া ব্যাবহার করতে শুরু করি।

ভিজুয়াল এই মিডিয়ামের শক্তি এতই যে,  সোশাল মিডিয়ায় আমার আঁকার রেস্পন্স দেখে প্রতিবার এক্টা নতুন কাজ শেয়ার করি আর নতুনভাবে অবাক হই!

আমাকে ছবির জন্য যত বেশি চেনে, জানে, তাতে আমার নিজেরই সন্দেহ হয় যে আমার সৃজনশীলতার মূল যাত্রা এবং আরাদ্ধ কবিতা, শুধু কবিতাই। 

ফলে, একেবারেই নিজের জেদে আঁকতে শেখার দায় নিয়ে এই যে এঁকে যাচ্ছি ছবি, এগুলোকে আমি  ভিজুয়াল পোয়েট্রিই বলব।

অস্থিরতা, এই এক্টা শব্দ -- যা দিয়ে আমার সৃজনশীল সত্তার প্রায় পুরোটাকেই ব্যখ্যা করা যায়।

আগে থেকে প্ল্যান করে কোনদিনই কিছু করে শেষ করতে পারিনি।

ফলত, আমার লেখা বা আঁকা সবই ইম্পালসের বশে করা।

প্রচন্ডভাবে অনুপ্রেরণা নির্ভর আমার সৃজন সত্তাটির একই সাথে ফাংশনাল এবং ভালনারেবল দিক যেটি, তা হল, পারিপার্শ্বিকতাকে ধারণ করতে গিয়ে কি আঁকা কি লেখায় একরকম থার্ড পার্টি হয়ে প্রচন্ডভাবে ইনভলভ হয়ে যাই।

করোনা শংকট ও লকডাউনের ফলে আমার এ শহরের চিরাচরিত জঙ্গমতায় ছেদ পড়লে প্রায় ডিস্টোপিয়ান এক ঢাকা দর্শন,  এবং ইভেনচুয়ালি ফের গতি জড়তা গেইন করতে থাকাবে শহর ও সময়ের এডাপ্টেভিলিটির ফলস্বরূপ এই 'নিউ নরমালে' অনভ্যস্ত মনের আক্ষেপ, শংকট এবং নিরাশাকাতরতার পাতালছায়াকলমে আঁকা দৃশ্যময় দিনলিপির ভেতর কোভিড জার্নাল (Covid Journal)  নামে  খুব রিসেন্টলি করা এই সিরিজ কাজগুলোতে একরকমের গ্রাস ও গ্রহনের পরাভব মেনে নেয়া প্যাসিভ এগ্রেসনের আভাস পাওয়া যাবে বলেই আমার ধারণা।

এই সিরিজের সব কাজই অগাস্টের শেষ থেকে নিয়ে সেপ্টেম্বরের এযাবৎকালের  ভেতর  করা।

—ইউসুফ বান্না

১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২০















একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ