শাহ ফরিদ
শাহবাগ
এবং আখতার ফারুক
রোমন্থন পর্ব (২)
ঘোর, বৈকল্য, স্বপ্ন অতঃপর বাস্তবতায়
ছবি: আন্তজাল থেকে গৃহিত |
শাহবাগ
আলোর নাচোন দেখতে দেখতে হাঁটি নাই
তবুও নিজের ছায়া দেখে সহসাই
হেসে উঠি এক সোনালী বিকেলে।
পৃষ্ঠে আলোর আপতনে আমি
প্রতিফলিত হই দীর্ঘ ছায়ার দিকে
একদৃষ্টে চেয়ে থাকি।
আমাকে দেখে মৃদু হাসে
সুন্দরীগণ
আর আমি হেসে উঠি
ওদের ছায়া দেখে।
রিক্সাযোগে ছুটে যাই ।
অকসাত্ আটকা পড়ি তীব্র যানজটে।
অস্বাভাবিক স্নায়ু সতেজতায় টের পাই
সহযাত্রীর শারীরীক ভাষা।
প্রেমিকার মাথা নিয়ে খেলতে হবে
কেননা কাঁচাবাজারে চরম প্রতিযোগীতা।
নিরব দাঁড়িয়ে থাকি কিছুক্ষন
তারপর চলে যাই।
হয়তো আজও আমরা কেউ কারো প্রেম
গভীর বিস্ময়ে উপলব্ধি করতে পারি নাই।
ধানকাটার কর্মময় রাতে যেদিন
আগুন হারিয়ে গেল
সহসা আঁতকে উঠি পেকে যাওয়া হলুদ কচুপাতা দেখে।
মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়
রাতের শঙ্খচিল শাদা কূয়াশা ভেদ করে
পড়ে থাকে বিস্তীর্ন ধানক্ষেত।
নগেনের নেহাই এ হাতুড়ীর ঘা পড়ে
একটানা বিকট শব্দে ঘোর ভেঙ্গে যায়
শিরশির বাতাসে পূর্বের প্রান্ত হতে ভেসে আসে
বাঁশির আর্তনাদ। রাতের ধান কাটা হলে
অবশেষে বেজে ওঠে নাড়াদের বিদ্রোহ সংগীত।
দুরপ্রান্তে তখন শান্তি অন্ধকার নামে মানুষের চোখে।
নীল জলরাশি প্রবল ঢেউয়ের মাঝে একা নৌকার হাল ধরে থাকি। দুলছে তরী হালছেড়ে দেই নাই। এর মাঝেই প্রয়োজনীয়তা শিখে ফেলেছে আমার আনাড়ি হাতেরা। পূর্বে অসংখ্যবার পাড়ি দিয়েছি এই নীল জলরাশি অসীম সাগর সমুহ কিন্তু কোনবার ই তীরে পৌঁছে তরী ভাঙ্গতে পারি নাই ফলত বার বার ফিরে তাকিয়েছি তরী কিংবা উত্পত্তির দিকে। এবার উত্পত্তিকে সংগে নিয়েই এসেছি। তীরে পৌঁছেই ভেঙ্গে ফেলব তরী মট মট ঢুক ঢাক সুশ্রাব্য ছান্দিক তীব্রতায়। হে আমার অতীত তোমাকে সাথে নিয়েছি তুমি আমার আদি সন্চয় তোমাকেই ঘিরে আমার আগামী। আমাকে ছেড়ে দিয়ো না। এই জলরাশি বিপদসঙ্কুল পথে ও তুমি আমার সাথী। হে অতীত তোমার ভেতর পেয়েছিলাম লম্বাচুল ওয়ালা মিশ্রিত সভ্যতার সাথী। আমরা দীর্ঘরাত একে অপরের মাঝে নাই হয়ে গিয়েছিলাম। পৃথিবীতে নাই হওয়ার আর উপায় পাই নাই হেতু তাকেও সাথে নিতে চাই। মানুষের ছাপানো কাগজগুলো সময়ের সন্তান দাবি করে আমার বিকারত্ব কে খানিক উসকে দিয়েছিল । ওদের খসখস শব্দে মাটির নিচের স্বর্ণগুলি হেঁসে নিজের মুল্য ও মৌলিকত্ব দাবি করেছিল। হে সপ্ন উভয়কে চূর্ন করো আর নিক্ষেপ কর ঘুর্ননরত ভবিষ্য গহবরে।এরপর ঢলিয়া পড়িব গভীর সজীবতার ভেতর গাড়ল অন্ধকারের ভেতর ঐকান্তিক নৈঃশব্দের ভেতর নির্ঘুম রাত গুলিকে ফিরে পাবার আশায়। ঘুম ভেঙ্গেছে বহুদিন পর। দৃশ্যের দৌরাত্ব যতদুর রাস্তায় সারি সারি ল্যাম্পোস্ট পিছনে ঢেকে গেছে কালোমেঘ উপরে আবছা আঁধারে ঝুলে আছে চাঁদ।
কবি পরিচয়:
কবি শাহ ফরিদ জন্মগ্রহন করেন রংপুরে। তরুন এই কবি বিজ্ঞানচেতনা পরিষদের সাথে যুক্ত আছেন। সম্পাদনা করছেন কবিতাপত্র ‘তীর’। এছাড়াও ‘মুক্তচিন্তা’র সম্পাদনা পর্ষদের সদস্য। কোন বই প্রকাশিত হয়নি।
0 মন্তব্যসমূহ
অস্বাভাবিক মন্তব্যের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।