এক.
বেঁচে থাকলে ভালো সময়ও আসবে,
পাতা ঝড়া দিনে নিশ্চুপ রাতের ঘুমঘুম চাঁদটাকে সাথে নিয়ে
ঘোর অন্ধকারের চেয়ে অচেনা কোন গা ছমছমে পাহাড়ি টিলা আর জঙ্গলে
অল্প দূষিত, প্রবল শোষিত আদিবাসী মজুরের
যে জীবন
সে জীবন গেয়ে উঠবে ফুলের ধোঁয়ায় আদিম আবেগে কোন স্বপ্নের গান
জানি আসবেই সে সময়।
সবারই আসে কি?
সবার হিসাব কেউ রাখেনা,
জানাটা কি সম্ভব?
কেনো আমি জানি, বিশ্বাস করি–
স্বপ্ন আর অনিশ্চয়তার জীবনে একটা দিক বেছে নেয়াই ব্যক্তির ঝোঁক,
তবু সেখানে আলক্ষ্যে থেকে যায় অনিশ্চয়তার বিষাদ।
রাতের পরে যেমন দিনের সূর্য আসে তেমন কোন নিশ্চিত আবর্তন নেই ভাগ্যচক্রে
হয়তো কোন চক্রই নেই।
হঠাৎ কোন অপ্রত্যাশিত সুখ কিংবা সাড়া বদলে দেয় দৃশ্যপট,
নিয়তির কথা মনে পরে- সে কি বোধের কেন্দ্রে থাকা কোন অশরীরী প্রিয়তমা?
যাকে অনুভব করা যায় কেবল, স্পর্শের বাইরে থেকেও জড়িয়ে থাকে সর্বাঙ্গে–
কি এক উৎপাতে মরে গিয়েও সুখ!
দৃশ্যপটে এতটা ব্যক্তিগত জীবন চাইনি কখনো,
নিজের ইচ্ছা ও যাপন আমাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে
তাও সঁপে দিতে পারছিনা কোন মহৎ প্রস্থান কিংবা শেষ প্রেমের কাছে!
দুই.
আমি নিচে পায়চারীরত তোমার শব্দ শুনতে পাই।
কান খাড়া করে রাখি,
না, খুব স্পষ্ট নয়।
আওয়াজ বাড়ে মনোযোগী হলে
তোমাকে পৃথক করতে পারিনা।
অনেকগুলো স্বরের নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়াজটা
বুঝিনা কেমন লাগছে, তবু উদগ্রীব, শুনতে চাই।
ধ্বনি কতটা টানে?
সুর, শব্দ?
কেমন বিভোর?
যেমন বিভোর হয়ে সেই লোকটা স্বর্ণমুদ্রা সবগুলো
একে একে ফেলেছিলো ওই কূপের পানিতে?
শব্দটা বিশেষ, একদম আলাদা!
বেশ দামিও বটে।
হ্যাঁ, প্রিয়তম সব কিছুই কিনতে হচ্ছে আমাদের।
দাম না পেলে কিভাবে পোষায় বলো?
স্বর্ণমুদ্রা পানিতে ফেলেই কেবল ওই শব্দটা মেলে–
তৃপ্তিটা মেলে।
তৃষ্ণা মেটেনাকো—
আরো গভীরভাবে, আরো সময় ধরে অনেক মূল্য চুকিয়ে শুনতে চাই তোমায়
এমন কোন ধ্বনি যা কেউ শোনেনি আগে
একটা প্রখর কান কিংবা আকাঙ্ক্ষার অভাবে।
জনান্তিক
জনসমীপে কিন্তু আড়ালে কাঁদি!
ব্যথার শহর বড্ড একা এখানে।
এখনো কেউ সংগোপনে টানে কৃষ্ণবিবরের চেয়েও গোপনে
তবে দৃশ্যমানের আঁতাতবদ্ধ শৃঙ্খলের চেয়ে অন্তত একটু বেশি নিবিড় আন্তরিকতায়।
দেখে না শুধু সে'ই। এতো কাছে আছি তাও দূরে, কেন গোপনে ভালোবাসো!
আবারও শ্রাবণধারা, হয়তো একটু বেশিই নোনা।
এরচেয়েও বড় ধোঁকায় দুলেছি নেশাবুদ হয়ে
তবুও মঞ্চের মাঝে নেই সে।
নেপথ্যে দারুণ প্রতাপ।
যাও ফিরে মরুঝড় হয়ে যেখানে দ্বিধাহীন প্রান্তর,
কিন্তু কোন প্রাণ নেই জেনো।
উপমার মোসাহেবি, রক্তস্রোতে তোমার চিহ্ন।
আরো কিছুটা নিবির হলেও কিছু আসে-যায়না।
মানুষ খুঁজে ফিরে একান্ত নীরবতা
মাঝেমধ্যে কিছুটা কোলাহলের ঝাঁপটা এসে উদ্বেলিত করে হয়তো।
তবুও জেনো–
আমাদের পরিণতি নিজের মধ্যে নির্বাসন, স্ব পরিত্যক্ত।
মঞ্চের লোকেরা মুক!
সরব দর্শক,
শিল্পিত সত্যের আড়ালে তখন ঢাকা পড়ে বাস্তবতা।
এখন সময় কেবল নিজের ইচ্ছেকে দমন করার নয়
তাদের বাক্যবাণ থেকে নিজেকে বাঁচানোরও।
0 মন্তব্যসমূহ
অস্বাভাবিক মন্তব্যের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।