১
অত মিথ্যে আমি শিখি নাই,
তবু সত্য বলতে গিয়ে দ্বিধাগ্রস্থ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকি
আপনি কি বোঝেন না আমি খুব দুঃখে আছি?
আমি তো দুর্বোধ্য নই,
জলের মত সহজ বয়ে যাচ্ছি আপনার দিকে
বৃষ্টি কি দ্যাখেন নাই এ বছর?
এক মাস বন্যায় ডুবে আছে গ্রাম,
আমি কি বলেছি—
খানকিরপোলারা, কার দোষে বাঁধ ভেঙ্গে গেলো?
শুধু আপনাকেই বললাম, একটু কাছাকাছি থাকুন,
দেখুন কী সহজ অস্ত্রপচারে আমাকে জেনে নেয়া যায়।
২
এক হাতে কলম অন্য হাতে সিগারেট,
রাতগুলো চোখের পাতায় জমে আছে
ভারি লাগে খুব!
তবু যদি কিছু লিখতে পারতাম সহজ বানানে!
পারিনা ওসব।
কত মৃত্যুর খবর আসে— শুনি,
মানুষের একদিন মরে যেতে হয়।
বুকের ভেতর ঝঙ্কার দিয়ে ওঠে
আমি সব শোকাহত মৃত্যকে এড়িয়ে তোমাকে দেখি,
তুমি কি আমার সেই ধুয়ে যাওয়া জীবনের নাম নও?
৩
আমাদের কল্পনা অসংখ্য রাজহাঁস হয়ে
দল বেঁধে ছোটাছুটি করে,
কোনদিকে জলাভূমি, শামুকের নিশ্চিন্ত চলাফেরা?
আমাদের ছুটি হবে দুজনেই জানি,
আসন্ন ভোজ উৎসবে অসংখ্য রাজহাঁস; আমাদের স্বপ্ন কল্প সত্য— লেলিহান আগুনের দাহে শুধু আমন্ত্রিত মানুষেরই ক্ষুধা!
অস্তমিত সূর্য পশ্চিমে— কোনো এক দেশে,
বয়স বাড়ছে; তুমি চলে যাবে,
তোমার নামের পাশে স্কেচ করা অসংখ্য রাজহাঁস
জীবন্ত হয়ে ওঠে।
৪
আমি আজকাল খুব জঞ্জাল মুছে ফেলছি,
শেষ ট্রেনটায় উঠে মনটায় বাজে সিগনাল
বুঝি গোলমাল, কেন রোজ রোজ তুমি নাও খোঁজ
কেন বোঝো না এত সোজা না- হয়ে স্বাভাবিক
ভুলে জাগতিক যত কামনা; তবু চেষ্টায়, আহা তেষ্টায় মরে যাচ্ছি;
তবু শেষটায় ডেকে বলছি মহি তোমাকে ভালোবাসছি? মুখে ফুলঝুরি আরো চন্দন আমি সারাক্ষণ করে চুম্বন জেনে নিচ্ছি এই জন্মের;
কাজ কম্মের সব ব্যর্থতা কেন মানবো তা?
তুমি শেখালে ফের তাকালে কোন আকাশে?
এত বাতাসে খুব আশা তে ভাসে ওড়না,
চলো পাহাড়ে হিম জল ছুয়ে তুমি স্নান সেরে- ঝড়ো ঝর্ণা ; ও কি স্বর্ণা প্রিও বান্ধবী?
তুমি আজগুবি খুব হাসছো, বন্ধুরা চেয়ে দেখছে শুধু একা কেন ভাসছো? যদি পাখি হও তুমি ডানা মেলে, হৃদয়ের সব চোখ খুলে তবে দেখবা মহি, আমিও পাশে মেঘ হয়ে এক বৃষ্টির চির সঙ্গ,
চতুরঙ্গ সারা অঙ্গ যেন জল হয়ে ঝরে যাচ্ছি
গায়ে মাখছো খুব ভুল করে ভেবে বৃষ্টি,
তুমি ভেঁজা গায় আমি লজ্জায় আহা মরে যাই,
এই বুকটায় মৃদু কম্পন, করে আলোড়ন আর প্রিয়জন ভেবে তোমাকেই কিছু চুম্বন জমে রাখছি; তবু স্বপ্নে বেডে সজ্জায় ভেবে রাখছি,
তুমি ঈশ্বর আমি নশ্বর, তুমি সম্মানে আর শ্রদ্ধায়
আল-আকসার থেকে উঁচুতে ;
মক্কার সব মিনারে, জেরুজালেমের মন্দিরে
মেঘঘন ওই চুল উড়ে; খ্রিষ্টের সব সমাধিতে, বুদ্ধের মহা প্রগতিতে তুমি সব কিছু
আমি মাথানিচু করে শুনছি, হাসলেই সব একাকার বাড়ে আযানের খুব চিৎকার,
আমি ধর্মে নানা কর্মে সাড়া দিচ্ছি।
2 মন্তব্যসমূহ
সজীব খন্দকারের কবিতা পড়লাম। সহজ ভাষায় কবিতার আমেজ তৈরি করেন। ব্যক্তিগত অনুভূতিগুলো এ যুগের ভাষার নিটোল কবিতা হয়ে উঠছে। ৪ নং কবিতা বাক্যাংশের মধ্যে মিল বা অনুপ্রাস লক্ষনীয়। ছন্দে পড়া যায়, অথচ মিল দেবার চেষ্টা প্রকট হয়ে ওঠে না। কিন্তু পাঠে একটা বহমানতা থাকে। সত্যেন দত্ত বা নজরুলের ছন্দকবিতার আবহ নিয়ে আসে। চমক নেই, কিন্তু আন্তরিকতা আছে। লিখে চলুন। নিশ্চয় পাঠকধন্য হবেন।
উত্তরমুছুনমনের কথা গুলো প্রোকাশ পড়ে ভালো লাগলো আরো ভালো কিছু লিখেন আপনার জন্য ভালোবাসা অভিরাম
উত্তরমুছুনঅস্বাভাবিক মন্তব্যের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।