....

‘জীবন আমার কাছে একটা দ্বান্দ্বিক ও গতিশীল ব্যাপার’ : কবি সাঈদ বিলাসের সাক্ষাৎকার

কবি সাঈদ বিলাস ১৯৮৮ সালের ৬-ই মার্চ বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের উজীরধরণীবাড়ি গ্রামে নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৯ সালের একুশে বইমেলায় কবিতার প্রথম বই প্রকাশিত হয়। ‘প্রতিকথা’ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই কাব্যগ্রন্থের নাম “শ্রমদাস”।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে কয়েকজন বন্ধু একত্রিত হয়ে ‘আমরা রক্ত চুষি রক্তচোষাদের’ এই স্লোগান নিয়ে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় “ছারপোকা” নামে কবিতার হ্যান্ডবিল। একটি সংখ্যা প্রকাশের পর নানা কারণে প্রকাশনা অব্যাহত রাখতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ই শহীদুল্লাহ্‌ হল ডিবেটিং ক্লাবের পক্ষ থেকে “বিস্ময়” নামে একটি ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেন। বর্তমানে এই কবি একটি অনলাইন সংবাদপত্রে চাকুরী করছেন। কবিকে আমরা ইমেইলের মাধ্যমে একগুচ্ছ প্রশ্ন পাঠিয়েছিলাম। তিনি ১০ আগস্ট ২০১৯ তারখে সেগুলোর উত্তর পাঠিয়েছেন। আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। উত্তরগুলো হুবহু প্রকাশ করা হলো। -সম্পাদক।

সা ক্ষা  কা 


প্রশ্ন
ছোটবেলায় কী হতে চাইতেন? মানে ‘এইম ইন লাইফ’ রচনায় কী লিখেছেন, তা নয়; বরং মনের ভেতরে সুপ্ত বাসনা ছিলো কি কোনো কিছু হবার জন্য?

সাঈদ বিলাস
এই সমাজে আমাদের জীবনটা আসলে এমনভাবে বেড়ে ওঠে যে এখানে সুনির্দিষ্ট কোনো নিজস্ব লক্ষ্য থাকা বা রাখা বা তৈরি করা খুব কঠিন। বিশেষ করে আমার ক্ষেত্রে বলা যায়, আমার ছোটবেলা এতো দুরন্তপনা আর বৈচিত্র্যের মাঝে কেটেছে যে, আলাদা করে মনের ভেতর কোনো সুপ্ত বাসনা ছিল না বলা যায়! পরিবার হয়তো কিছু লক্ষ্য ঠিক করে দিতে চেয়েছে, সেই অনুযায়ী তারা আমাকে প্রাতিষ্ঠানিকিকরণও করেছে। তবে নানা সময়ে নানা কিছু হবার বাসনা মনে উঁকি তো দিতই, কিন্তু সেটা সুনির্দিষ্ট কিছু না। এই যেমন ধরেন, আমাদের বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে কাশফুলের একটা বড় বাগান ছিল, যেটা প্রাকৃতিকভাবেই গড়ে উঠতো প্রায় প্রতি বছরেই, শরৎ কালে প্রায়ই বিকেলেই আমি একা একা কাশফুলের বাগানে শুয়ে শুয়ে নীলাকাশে সাদা মেঘের ভেসে বেড়ানোর খেলা দেখতাম, কী চমৎকার একটা দৃশ্য! এমন হতো যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমি ওভাবেই শুয়ে আছি। তো তখন মনে হত যে বড় হয়ে আমি এইরকম একটা কাশফুলের বাগান দিবো আর শুয়ে শুয়ে আকাশ দেখবো। আবার মাঝে মাঝে মনে হতো, বড় হয়ে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করবো, কারণ তখন দেখতাম হাওয়াই মিঠাইওয়ালারা কত দূরে দূরে ঘুরে বেড়ায় আর কী সুন্দর করে রঙ্গিন রঙ্গিন হাওয়াই মিঠাই বানায়, ওইটাকেই ওই সময়ের সবচেয়ে সৃষ্টিশীল কাজ মনে হতো। তো এই রকমই আরকি! সময়ে সময়ে নানা ইচ্ছে মাথার ভেতরে উঁকি দিতো, মনের ভেতর খেলা করতো।     

প্রশ্ন
একজন  লেখকের  ভেতরের ‘মানুষসত্তা’কে  কীভাবে  ব্যাখ্যা  করেন?

সাঈদ বিলাস
দেখুন, মানুষ তো আর আট দশটা প্রাণীর মতই একটা প্রাণী; অন্য প্রাণীর সাথে মানুষের পার্থক্যের জায়গাটা এখন পর্যন্ত আমাদের জানা মতে, মানুষের চিন্তা করবার যে সক্ষমতা ও সে চিন্তার একটা বিকাশ। এই বিকাশ কিন্তু চলমান একটা প্রক্রিয়া। তার এই চিন্তা করবার বিকাশটা প্রাকৃতিকভাবেই পেয়েছে সে, এখন যেটা পেয়েছে মানুষ, তা থেকে পেছনে ফেরার আর কোন উপায় তার নেই। ফলে হোমো স্যাপিয়েন্সকে ধীরে ধীরে প্রাণী থেকে মানুষ হয়ে উঠতে হয়, যেটা তার সামাজিক বিকাশের একটা প্রক্রিয়া। এই যে মানুষ হয়ে ওঠা কিংবা মানবসত্তা ধারণ করে বেড়ে ওঠা, এইটা একজন লেখকের ক্ষেত্রেও অন্য আর আট দশজন মানুষের মতোই সামাজিক বিভিন্ন চিন্তার স্তর থেকে সে পায়। অন্য মানুষের থেকে লেখককে অনেক বেশি সেনসিবল বা আন্তরিক থাকতে হয় জীবনের প্রতি, জগতের প্রতি। তার ভাবনা চিন্তাটাও তো অনুশীলন বা সামাজিক অনুশীলন থেকেই আসে, ফলে সমাজ থেকে নানা উপাদান অ্যাবজর্ব করতে হলে তাকে তার অনুশীলনের প্রতি সৎ ও আন্তরিক থাকতে হয়। আমার কাছে লেখকের ভেতরের মানবসত্তা বলতে মনে হয়, জগতকে বোঝার ক্ষেত্রে, মানুষকে বোঝার ক্ষেত্রে অনেক অনেক বেশি হৃদয়ের অনুগামী হওয়া, অনুশীলনের প্রতি সৎ ও আন্তরিক হওয়া, সর্বোপরি জীবন ও জগতের প্রতি একটা বোধ থাকাটাকে।               

প্রশ্ন
জন্ম-মৃত্যুর  মাঝখানের  জীবন  সম্পর্কে  আপনার  অনুভূতি  কী?

সাঈদ বিলাস
যার শুরু আছে, তার শেষও আছে নিশ্চয়ই! জীবন ও মৃত্যুর মাঝখানে যে জীবনটা আমরা পাই সেটাই তো আসলে জীবন। জীবন বলতে আমি এই জীবনকেই বুঝি। এই জীবনটা আমার কাছে একটা দ্বান্দ্বিক ও গতিশীল ব্যাপার বলে মনে হয়। এখানে আনন্দ যেমন আছে তেমনি বেদনাও কিন্তু আছে। আনন্দ-বেদনার এই দ্বান্দ্বিক সম্পর্কের গতিময়তাই জীবন যা কখনো এগোয়, কখনো পিছোয়; তবে আমার মনে হয় সার্বিকভাবে জীবন আসলে এগোয়। আপনি কিন্তু নিরবিচ্ছিন্ন আনন্দ বা নিরবিচ্ছিন্ন বেদনা নিয়ে জীবন কাটাতে পারবেন না। জীবন হচ্ছে ছোট ছোট মুহূর্তগুলোর দ্বন্দ্বের গতির ফলাফল। একটার পর একটা গতিশীল সিকোয়েন্সই জীবন, সেখানে স্লোনেস আছে এবং থাকবে, কিন্তু জীবন কোনো ভাবেই গতিহীন নয়। আমার মনে হয় জীবনে হাহাকার আর হতাশা খুবই খুবই দরকার শুধুমাত্র এর বিপরীত একক পূর্ণতা আর আত্মবিশ্বাস এই ব্যাপারগুলো অনুভব করার জন্য। আপনার ভেতরে প্রচুর পরিমাণ হাহাকার না থাকলে আপনি পূর্ণতার স্বাদ উপভোগ করবেন কী করে! ফলে জীবন সম্পর্কে একটা দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি খুবই জরুরি। দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি না থাকলে জীবন হয় কী করে! আমরা সবাই কোনো না কোনো দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিকে ধারণ করেই চলি (যদিও সময় সময় আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টায় নানান চিন্তার পরিবেশে বা কাজে এসে, সেটা হয় সামনে এগোয় কিংবা পিছায়, কিন্তু মানুষ কোনো না কোনো দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করেই), যদিও আমরা সবাই এমন ভান করি যে আমরা এটা ধারণ করি না। আমার এই কথাগুলো শোনার পর হয়তো অনেকেই হয়তো বলবে কী বলে এসব! পাগল নাকি! কিন্তু আমার মনে হয়, মানুষ (লেখক তো আর মানুষের বাইরের কেউ নয়!) হিসেবে শ্রেণিবিভক্ত সমাজে কোনো না কোনো দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে কেউ নয়। একটা দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা খুবই জরুরি, এটাই আমার জীবনবোধকে এগিয়ে নিয়ে যায়, আমার কাজকে, আমার চিন্তাকে পথ নির্দেশ করে।    

প্রশ্ন
লেখার ক্ষেত্রে আপনার কোনও প্রেরণার জায়গা আছে কি?

সাঈদ বিলাস
অনুপ্রেরণার তো অভাব নেই, এই যে বেঁচে আছি, নিঃশ্বাস নিচ্ছি এটাই তো সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। এছাড়া চোখ মেলে তাকালেই নানান হতাশার উপাদানের পাশাপাশি অনুপ্রেরণারও উৎস খুঁজে পাই আমি। তবে বর্তমানে আমার অনুপ্রেরণার জায়গা হচ্ছে, আমার মেয়ের মুখের হাসি। ওই হাসি দেখলেই আরও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে।

প্রশ্ন
‘কবিতায় ছন্দ’ প্রসঙ্গে আপনার অভিমত কী?

সাঈদ বিলাস
এই বিষয়ে বলতে পারি, ছন্দও মূলত দ্বন্দ্বের ব্যাপার। এককভাবে কবি ও কবিতা কেউই ছন্দের দাস না, আবার ছন্দও কবি ও কবিতার দাস না। এটা মূলত ভাবের সাথে প্রকাশের দ্বন্দ্বের বিষয়। একটা নির্দিষ্ট নিয়মের ভেতরে থেকে কখনো কখনো ছন্দকে ভাঙতে জানতে হয় এবং প্রয়োজনে ভাঙতেও হয়। ছন্দের দাস হওয়ার কিছু দেখি না। কোনো নিয়মই সার্বজনিন বা চিরকালীন নয়, তবে নিয়ম ভাঙবে নিয়মের ভেতর থেকেই নতুন যে নিয়ম বের হয়ে আসবে তা থেকে, যেহেতু এটা বিজ্ঞানেরই একটা বিষয়, ফলে জোর করে বাইরে থেকে চাপিয়ে দিয়ে ভাঙা যায় না।    

প্রশ্ন
ছোটবেলায় কি লেখালিখি করতেন?

সাঈদ বিলাস
এটা নির্ভর করছে ছোটবেলা বলতে আপনি ঠিক কোন বয়সটুকু বুঝাচ্ছেন তার উপর! খুব ছোটবেলার কথা যদি বলেন, এই যেমন ক্লাস ফাইভের কথা, তাহলে এক কথায় না! অত ছোটতে মাঠে খেলার কথা ছাড়া আর কিছু মাথায় আসতো না। তবে ক্লাস নাইন টেনে থাকতে দুই চারলাইন অনুভূতি তো প্রকাশ করেছি লিখে, যেটা ওই বয়সে অনেকেই করে। তবে ক্লাস টেনে পড়াকালীন সময়ে আমরা তিনজন মিলে একটা মঞ্চ নাটক লিখেছিলাম, আমাদের স্কুলের বাংলা শিক্ষক, আমার পরের ক্লাসের কাছের এক ছোট ভাই আর আমি মিলে, মঞ্চায়নের জন্য। ওই নাটকের দু’টো মঞ্চায়ন আমরা করেছিলাম, সাড়াও পেয়েছিলাম। তারপর থেকেই সম্ভবত লেখালেখির দিকে একটু মনোযোগ আসে, তবে ওটাও সিরিয়াস ছিল না তখন। লেখালেখি মানে (কবিতা লেখা আরকি!) আমি সিরিয়াসলি শুরু করি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়ার তিন থেকে সাড়ে তিন বছর পর। তবে একটু বলা যেতে পারে, ছোটবেলায় না লিখলেও কমিক, কবিতা, গল্প, আর উপন্যাসের প্রতি আমার একটা দুর্বলতা ছিল এবং এই অভ্যাস গড়ে ওঠার পেছনে স্মরণ করা যেতে পারে কাছের এক দিদি আর দূর সম্পর্কের এক খালার কথা। পড়ার এই অভ্যাসটাই হয়তো লেখালেখির জন্য আমাকে ভেতরে ভেতরে তৈরি করেছে! কে জানে! 

প্রশ্ন
লিখতে কেমন লাগে?

সাঈদ বিলাস
এটা খুব কঠিন প্রশ্ন! লিখতে ভালোই তো লাগে, যেহেতু যা লিখি সেটা হচ্ছে আমার হৃদয়ের একান্ত ক্ষরণের কথা! ফলে লিখতে বিশেষ করে কবিতা লিখতে আমার কখনোই লেখার প্রতি বিরক্তি আসে নি। লেখাটাকে আমার বেঁচে থাকার অন্যতম অনুষঙ্গ মনে হয়। দীর্ঘদিন লিখতে না পারলে যে ছটফটানি শুরু হয় ভেতরে, সেটাই হয়তো আমাকে বাঁচিয়ে রাখে!


প্রশ্ন
আপনি কী ধরনের বই পড়তে পছন্দ করেন?

সাঈদ বিলাস
সত্যি কথা বলতে কী, এই মুহূর্তে খুব একটা বই পড়ার সময় পাই না। তবে আগ্রহের জায়গার ব্যাপ্তি বেশ বড় বলা যায়, দর্শন, রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, গল্প, কবিতা, উপন্যাস, বিজ্ঞান থেকে শুরু করে একাডেমিক সবই পড়তে চাই। কিন্তু সময় করে উঠতে পারছি না ইদানীং। তবে গত কিছুদিন হলো একাডেমিক বইয়ের দিকে নজরটা একটু বেশি দেয়া হচ্ছে।  

প্রশ্ন
এখন কোন বইটা পড়ছেন?

সাঈদ বিলাস
এখন মূলত তিনটা বই পড়ছি; মাও সেতুঙ রচনাবলী থেকে “অনুশীলন প্রসঙ্গে, দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে” ও “মানুষের নির্ভুল চিন্তাধারা আসে কোথা থেকে” (এই রচনা তিনটি আমি অবশ্য কিছুদিন পর পরই পড়ে থাকি), জাহিদ জগৎ এর উপন্যাস “অন্নদাস” আর মন্টগোমারির পরিসংখ্যানের একটা একাডেমিক বই “ডিজাইন এন্ড এনালাইসিস অফ এক্সপেরিমেন্ট”।

প্রশ্ন
আপনি বারবার পড়েন, এমন কবির নাম জানতে চাই।

সাঈদ বিলাস
পড়ি তো অনেকের কবিতাই। তবে বারবার পড়া হয় মূলত নবারুণ ভট্টাচার্য, জীবনানন্দ দাশ, অমিয় চক্রবর্তী, বিষ্ণু দে, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, বিনয় মজুমদার, আবুল হাসান, আশিক আকবর এর কবিতা। তবে ইদানীং ফেসবুক মারফত নতুন কবিদের কবিতা বারবার পড়া হচ্ছে। 

প্রশ্ন
লেখা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে  অন্তর্জালকে  কীভাবে দেখছেন?

সাঈদ বিলাস
লেখা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে অন্তর্জাল সামনের দিনের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল মাধ্যম; ফলে এটাকে আমি বেশ ইতিবাচক হিসেবেই দেখি। তবে তার মানে এই না যে, প্রেসে ছাপানোর গুরুত্ব একেবারে নাই হয়ে গেছে।

প্রশ্ন
আপনার কি বিশেষ ধরনের রাজনৈতিক বিশ্বাস আছে? কবিতায় সেই বিশ্বাস এর প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাই...

সাঈদ বিলাস
অবশ্যই আছে। যেহেতু আমি দর্শন হিসেবে দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে ওন করি, ফলে দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে ধারণ করে যে রাজনীতি অর্থাৎ কমিউনিজমের প্রতি আমি আস্থা রাখি এবং বিশ্বাস করি মানুষ একদিন অবশ্যই সাম্যবাদে পৌঁছাবে; একশ বছর, দুইশ বছর এমনকি এক হাজার বছরও লাগতে পারে কিন্তু মানুষের আল্টিমেট ভবিষ্যৎ হচ্ছে কমিউনিজম। হ্যাঁ, কবিতায় সেই রাজনৈতিক বিশ্বাসের একটা বড় রকমের প্রভাব তো আছেই এবং সেটা থাকবেই। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত অন্য কোনো সাক্ষাৎকারে বলা যেতে পারে এবং কবিতায় রাজনৈতিক বিশ্বাসের প্রভাব নিয়েই আলাদা একটা সাক্ষাৎকার হতে পারে। আপনি আগ্রহী থাকলে এই বিষয়ের ওপর আমি পরে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি আছি।  

প্রশ্ন
আপনি কি এক বসায় কবিতা লেখেন, না কি বারবার সংশোধন করেন?

সাঈদ বিলাস
আমার ক্ষেত্রে দু’টোই ঘটে। কখনো কখনো এক বসায় হয়ে যায়, আবার কখনো কখনো অসংখ্যবার সংশোধন করতে হয়। এটা নির্ভর করে, লেখার ওই নির্দিষ্ট সময়টাতে আমি যা বলতে চাই তার প্রকাশে আমি সন্তুষ্ট কিনা, তার ওপর। আবার অনেক সময় এমন হয়, যখন লিখেছি তখন ভালো লাগলো, কিন্তু পরে গিয়ে মনে হল যে, না এরকমও হতে পারতো, তখন আবার সংশোধন করি।   

প্রশ্ন
আপনি দিনের কোন সময়টাতে লিখতে পছন্দ করেন? কোনো রুটিন আছে কি এ ব্যাপারে?

সাঈদ বিলাস
না, এই ব্যাপারে আমার কোনো সুনির্দিষ্ট কোনো রুটিন নাই। দেখা যাচ্ছে যে, আমি একা বসে ভাবছি অথচ কোনো কবিতাই আসছে না, আবার প্রচুর ব্যস্ত আছি অন্য কাজ নিয়ে একটা ভাব চলে আসলো, লিখে ফেললাম; উল্টোটাও ঘটে অবশ্যই। তবে রাতের বেলা যখন একা একা একান্তে নিজেকে সময় দেই, সেই সময়টাতে লিখতে আমার ভালো লাগে; কিন্তু এটাকে ঠিক রুটিন বলা যাবে না!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

অস্বাভাবিক মন্তব্যের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।