....

গদ্য : বিনয় | অনির্বাণ রায়




বিনয় জিনিসটা খুব অদ্ভুত। বারো বগির লোকাল ট্রেনের পাঁচ বা ছয় নম্বর কামরার ভিতর, দুই পাশের সিটের মাঝে দাঁড়ানো ভিড়-সামলানো যাত্রীর মতো।কামড়ার ভিড়ে ভিতর থেকে না শোনা যায় ভালো করে কোনো ঘোষণা; দরজা থেকে খবর ভিতরে আসতে আসতে তথ্যই যায় পালটে।একটু দূরে দরজায় ঝুঁকে দাঁড়ানো ছোকড়া পর্যন্ত চিৎকার করা যায়না, "ভাই সিগন্যাল দিয়েছে?"

মুশকিল তাই। বিনয়ী হতে গিয়ে হয় মানে দাঁড়ায় সে সিক্রেটিভ, সুযোগসন্ধানী। অথবা সে ভীতু, দিশাহীন, সবাইকে সামনে চলে যেতে দিচ্ছে।

তাই কোনটা বেশি গোলমেলে, বোঝা মুশকিল।কাছের মানুষগুলোর প্রতি informal হয়ে নৈকট্য নির্মাণ করে তাদের স্বতঃস্ফূর্ত নজরে থাকা - সেটা? নাকি যোগাযোগে জোয়ার-ভাঁটা হচ্ছে সেটা বোঝাবার চেষ্টায় সাবধানে অথচ সবটুকু যত্ন নিয়ে শব্দ নির্বাচন করেও তাদের বিরাগভাজন হওয়া - সেটা? দোষ নিজেরটাই ধরতে হয়, শান্তির জন্যে।

আর কখনো কখনো, গ্যালপিং লোকালের মতো নির্বাচিত স্টেশনে থামা পাঠকপাঠিকা বা দর্শকের ভিড়েও যখন কেউ বুঝতে না দিয়েও সব নীরবে খেয়াল রেখে যায়, তার প্রতিই হয়ে যায় তৎক্ষণাৎ অবহেলা, সে অবহেলা অনিচ্ছাকৃত হলেও।এ অবহেলা আসলে আসে বহুদিনের জমে ওঠা অভিমান থেকে, কিন্তু কার প্রতি, সেটাই ঠাওর হয়না। যখন কেউ সরলভাবে লিখে জানায়, "তোমার পোস্টগুলো 'see first' করা আছে," তখন কাড়ি কাড়ি পোস্ট-লেখা কথা সব চুপসে যায় শুধু একটা 'ওমা?'-শব্দতে। কি বলি আর। আনন্দ হলেও, ভুল ও দোষের ঢেউয়ে ধাক্কা খেতে খেতে নাজেহাল তরী শুধু একটি ছলাৎ শব্দ সেরেই বিনয় করে সরে যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

অস্বাভাবিক মন্তব্যের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।