....

তিনটি কবিতা | রাফাতুল আরাফাত




একটি গোলাপের অপমৃত্যু
শিরিষের পাতার মতোন তুমি দূরে যাচ্ছো,
তোমার চোখে তাকালে কেবলই মনে হচ্ছে-
একটা গোলাপের অপমৃত্যুর জন্যে ফেঁসে যেতে পারো তুমি
আর আমি হয়ে উঠতে পারি পৃথিবীর সবচেয়ে অহংকারী শূয়র গোত্রীয় পুরুষ।

তোমার চোখের আইশেড মুছে হয়ে যাবে ফুলের রঙিন রেণু
যেকেউ তোমার চোখে তাকালেই বুঝে যাবে -
তুমি আসলে একজন খুনী।

তোমার স্তন থেকে তুলে নেয়া হবে গোলাপের সুভাস
আর সেখানে যুক্ত হবে কার্তুজের ঝাঁজালো গন্ধ
তোমার প্রেমিক তোমার সাথে প্রতিবার শুতে এসে টের পাবে -
তুমি আসলে একজন খুনী।

অনেক বছর পর তুমি আমাকে দেখবে, দূর থেকে
একটা শুকনা পাতার মতোন ভেসে যাচ্ছি
বৃষ্টি আমাকে ছুঁতে পারছে না।
দেয়াল থেকে গ্রাফিতি আমার দিকে হেঁটে আসছে,
ছুঁতে পারছে না।
আমাকে দেখে তোমার মনে হবে-
তুমি আসলে একজন খুনী।


মগজ মৃত্যুর কারণ

অতিরিক্ত ওজনের মগজ নিয়ে আত্মহত্যা করা কুকুরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে একজন শেয়াল কাঁঠালের বিচি দিয়ে একটা গোল্লা এঁকে তার মধ্যে লিখলেন - সবার মগজ থাকতে নেই রে শূয়রের বাচ্চা!

একজন কুকুরকে শূয়রের বাচ্চা বলায় আমরা উদ্বিগ্ন হলাম। তীব্র প্রতিবাদ করলাম আমি এবং চিন্তা বিশারদ তিনজন কুকুর। বিষন্নতার ভান করলাম, কান্না করলাম। কান্না থামিয়ে যার যার ঘরে ফিরতে ফিরতে আমরা একে অপরকে শূয়রের বাচ্চা বলে সম্বোধন করতে শুরু করলাম।


বিশ্বাস

অসমান একজোড়া পা নিয়ে আমি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকি। শেষরাতে একটা বাস আসে। বাসের কন্ট্রাক্টর আমাকে অনেকক্ষণ দেখে মুখ বাঁকা করে হাসি দিয়ে চলে যায়। বাস চলে যাবার সময় আমি দেখি বাসের পেছনে বড় করে লেখা - পকেটমার হইতে সাবধান।

একজন হাতপাখা বিক্রেতা আমার গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। কাঁধের উপর রাখা একটা কাপড়ের হাতপাখায় লেখা - ভুলোনা আমায়। পৃথিবীর সকল প্রেমিকারা এমন বাক্য লিখে হাসতে হাসতে অন্য পুরুষের সাথে শুতে পারে ভাবতে ভাবতে আমি পাশের বাসার পানির ট্যাংকের কথা ভাবি যে ছাদহীন গোসলখানার  উপর থেকে বৌদির গোসল দেখে মাস্টারবেট করে। পানির ট্যাংকটার গায়েও বড় করে লেখা, বিশ্বস্ততার আরেক নাম।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

  1. রাফাতুল আরাফাত এর কবিতা একটা বড় পরিবর্তন এর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কোথায় স্থির হবেন বলা যাচ্ছে না। বা আদৌ ঠিক হবে কিনা, অস্থিরতাই বয়ে যাবেন কিনা, তাও স্পষ্ট হচ্ছে না। কবিতাগুলো ভাল্লাগে নাই। তবে রাফাতুল নিজেকে যেভাবে ভাঙছেন গড়ছেন, ব্যাপারটা ভালো লাগছে। গতানুগতিক গোঙরানি থেকে কয়জনইবা বেরুতে পারতেছে?

    উত্তরমুছুন
  2. আমার কাছে তো ভালই লাগল। কেমন নতুন দৃশ্যপট কবিতাগুলো ভিতর থেকে বের হয়ে আসছে।

    উত্তরমুছুন

অস্বাভাবিক মন্তব্যের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।