....

‘লেখক হিসেবে আমি মানব নিরপেক্ষ থাকতে চাই’ : কবি সব্যসাচী মজুমদারের সাক্ষাৎকার


সব্যসাচী মজুমদার জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ২ আগস্ট৷
রামনগর রোড, বনগাঁ, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। পেশায় গৃহশিক্ষক। ছোটোবেলাতেই লেখালিখি শুরু হয়৷ বাংলা ভাষার ছাত্র। কবিসম্মেলন, কৃত্তিবাস, বিন্দু, গদ্যপদ্যপ্রবন্ধ, ট্রাপিজ, নীললোহিত, সুখপাঠ দ্য ওয়াল, তীরন্দাজ সহ বাংলা ভাষার বিভিন্ন সাহিত্যপত্রে নিয়মিত লিখছেন৷
তিনটি কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে: মেঘ আর ভাতের কবিতা, আজন্ম ধানের গন্ধে, তৃতীয় পৃথিবী। নিয়মিত কবিতা রচনা ও কাব্যগ্রন্থ আলোচনা লেখেন।

সা ক্ষা  কা 


দিব্যক
ছোটবেলায় কী হতে চাইতেন? মানে ‘এইম ইন লাইফ’ রচনায় কী লিখেছেন, তা নয়; বরং মনের ভেতরে সুপ্ত বাসনা ছিলো কি কোনো কিছু হবার জন্য?

সব্যসাচী মজুমদার
দেখুন, এ ব্যাপারে আমার ভাগ্য কিছু ভালো। একবার স্কুলের দিদিমণি অনুযোগ করেছিলেন, আমার কিছু হবে না। রেজাল্ট খারাপ হ‌ওয়ায় জন্য আর কী! বাবা সব শুনে-টুনে উত্তেজিত মায়ের সামনে দুম করে বলে দেয়, তোর কিছু হতে হবে না।সাহস ছিল বলতে হবে। কারণ মা সে সময় যা উত্তেজিত ছিল, তাতে বিস্ফোরণ ঘটে যেতেই পারত। কিন্তু দেখলাম মা একেবারে মিউট হয়ে গেল। অবশ্য দু’দিন লেগেছিল বাকস্ফূর্তিতে।

এবার দেখুন, বাঙালির ছেলে। জাত অলস। তার ওপরে পিতৃপ্রদত্ত এহেন দরাজ সুযোগ, কাজে লাগাব না! বলতেই পারি, অলসতা হেতুই ছোটোবেলাতেই শিক্ষক হ‌ওয়ার থেকে বেশি কিছু ভাবতে পারিনি। তাছাড়া পারিবারিক শিক্ষা সংক্রান্ত সংলগ্নতাও এদিকে ভাবিয়েছিল। সেদিক থেকে বলা যায় আমি অত্যন্ত সফল। সরকারিভাবে না হলেও বেসরকারিভাবে নিজেকে এই পেশাই দিতে পেরেছি।

দিব্যক
একজন  লেখকের  ভেতরের ‘মানুষসত্তা’কে  কীভাবে  ব্যাখ্যা  করেন?

সব্যসাচী মজুমদার 
দেখুন এখানে আমার একটা অন্য কথা রয়েছে।লেখক হিসেবে আমি কিন্তু মানব নিরপেক্ষ থাকতে চাই। বলা ভালো মানব সত্তাকে এক অর্থে অস্বীকার করতেই চাই। কারণ আমি বিশ্বাস করি, 'সবার ওপরে মানুষ সত্য' –এর মতো অপরাধপ্রবণ, অহংকার আর হয় না৷ সেপিয়েন্সের ইতিহাস যদি দেখেন, অন্ততঃ চার প্রকার মানব জাতির সম্পূর্ণ বিলোপের কারণ হয়ে পৃথিবীতে টিকে র‌ইল। তারপর শুরু হলো নিজের প্রয়োজনে পশু, পাখি, বৃক্ষের‌ও গ্রাফটিং পাল্টে দেওয়া। 

আপনি বাগান করছেন। আপনি দামি দামি গাছ লাগিয়ে তাক লাগানো নান্দনিক করে তুলেছেন।আসলে কী করলেন! ভূমিপুত্রদের উচ্ছেদ করে, অর্থাৎ স্বাভাবিক গাছগুলোকে মেরে আপনার ইন্দ্রিয়ের উপভোগ্য গাছগুলোকেই বাঁচালেন। আপনার ব্যাক্তি বাসনাকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুললেন প্রকৃতির চাহিদার বিরুদ্ধে গিয়ে। মানে মানুষের সমাজে যা চলছে, যোগ্যতমের উদবর্তন-তাই ঘটালেন। এর ফলে এক প্রকৃতি তো বিপর্যস্ত হলোই, আত্মবিলোপের দিকেও একধাপ এগোলেন৷ এই হিসেবেই দেখুন পৃথিবীতে পোষা কুকুর আর বুনো নেকড়ের রেশিও, দেখুন শকুন আর ব্রয়লারের রেশিও।

একজন লেখক হিসেবে, আমি তাই নিজেকে এমন একটা প্রাণী মনে করি, যে হত্যা এবং হত্যা বিরোধীতা দুটোই করে স্রেফ নিজের স্বার্থে। এবং আদ্যন্ত আত্মভুক।

দিব্যক
জন্ম-মৃত্যুর মাঝখানের জীবন সম্পর্কে  আপনার অনুভূতি  কী?

সব্যসাচী মজুমদার
দেখুন এটা ভীষণ জটিল প্রশ্ন। এই ধারণাটা তৈরি করার জন্য‌ই বোধহয় এই জীবন। সবাই মানে যাঁরা ধারণাটা নথিবদ্ধ করে গেছেন, কোন‌ও না কোন‌ও ফর্মে, সকলেই নিজের নিজের মতো ধারণা রেখে গেছেন। এখন আমি এই অসম্পূর্ণ বোধ থেকে একটা বিপুল, না জানা বিষয়ে কথা বলতে যদি যাই, তবে সেটা হবে অন্যের কথা নিজের বলে চালিয়ে দেওয়া। আমি যতটুকু ধারণা করতে পেরেছি, তা তো আমার লেখালিখি।
একটা শব্দ–নৈশব্দের রণনে ভেসে যাওয়া। শূন্যতার মতো।

দিব্যক
লেখার ক্ষেত্রে আপনার কোনও প্রেরণার জায়গা আছে কি?

সব্যসাচী মজুমদার
এই যে বেঁচে আছি, দেখছি নগর থেকে গ্রাম।দেখছি না অরণ্য ও আরণ্য। মানুষ আর মানুষের ক্রমবিকার, নাগকেশরের টুপ খসে পরা, হাস্নুহানা, আমার উঠোনের কদম, উঁই, কেঁচো, কেন্নো, ঘেয়ো কুকুরের পুঁজ, অনৈতিক মাছি কিংবা সিনেমা—লেখার উৎসেচক বলে মনে করি।

দিব্যক
বর্তমানে বাংলা সাহিত্যের  আলোচনা-সমালোচনা চর্চা  কতটা  গঠনমূলক হচ্ছে?

সব্যসাচী মজুমদার
হচ্ছে না বলে দাগিয়ে দেওয়া সহজ। আমি দেবো না। হচ্ছে। এবং আগের মতোই হচ্ছে।আসলে আমরা দৃষ্টিকে একজায়গায় আটকে রাখি।শঙ্খ ঘোষ প্রণীত ‘দেখার চোখ’ নামক ভারি সুন্দর একটা প্রবন্ধ আছে। খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা রেখেছিলেন তিনি। আমি যদি কেবল আমার মতো করে অন্যজনকে দেখি, দেখাটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।অন্যের জায়গায় নিজেকে রেখেও দেখা যায়।

এবার আমাদের দেখাটা সবসময় নিজের দিকে থেকে হয়ে যায় বলে মনে হয় পরে আর কিছু হচ্ছে না। কিন্তু হয়। এক‌ই রকম হয়। নিজের সময়ে বসে সেটা বোঝা যায়। চোখে পড়ে অনেকের কর্মকাণ্ড। কিন্তু তারপরের সময়ের মধ্যে আমরা ঢুকে দেখি না। বাইরে থেকে দেখি। দুটো কী একটা নাম পাওয়া যায়। তখন নিজের সময়ের সাপেক্ষে তাকে কম মনে হয়। কিন্তু নিজের সময়ের প্রতি নিরপেক্ষ থাকলেও দেখা যায় ঐ একটা দুটো নাম‌ই আছে। চেষ্টা অনেকে মিলেই করেন যদিও।

আমার সমকালের বন্ধুদের কিংবা তারপর লিখতে আসা অনেক তরুণ খুবই শক্তিশালী আলোচক। তাঁদের আলোচনা ঋদ্ধ করে চলেছে বাংলা ভাষাকে। আমাদের পূর্বজ দশকগুলির কয়েকজন অনিবার্য আলোচক তো রয়েইছেন বাংলা ভাষায়।আর আমি বাংলা ভাষার কোন‌ও মানচিত্র জানি না।

দিব্যক
‘কবিতায় ছন্দ’ প্রসঙ্গে আপনার অভিমত কী?

সব্যসাচী মজুমদার
উত্তরটা এক কথায় সেরে দেওয়াও যায়, আবার বলা যায় অনেকটাই। তবে বহুল আলোচিত এই প্রসঙ্গ।

ছন্দ ব্যতিরেকে কবিতা অসম্ভব।

ছন্দ মিলিয়ে বলিনি কিন্তু।

বাংলা শব্দের, কেন, পৃথিবীর সমস্ত ভাষার‌ই শব্দের একটি স্বভাব স্পন্দন আছে। থাকতেই হয়। শব্দের কাজ বাক্যের মধ্যে তাকে বিছিয়ে দেওয়া। এবার কবি সেই বিস্তারকে কীভাবে সাজাবেন সেটা তাঁর ওপর নির্ভর করে। একজন মানুষ যদি কবিতা লিখতে আসেন, তাঁর ছন্দ বোধ থাকতেই হবে। তিনি ছন্দ প্রত্যক্ষে রাখতেও পারেন আবার ছন্দপ্রচ্ছন্নতাতেও বিশ্বাস করতে পারেন। কিন্তু স্বর-ধ্বনিজাত সুর তাতে থাকবেই। যার বিন্যাসটা না বুঝলে ব্যবহৃত শব্দ অক্ষম অস্ত্র হয়ে যায়। ভেদন ক্ষমতা কমে যায় বলেই বিশ্বাস করি।
এই ছন্দ চর্চা কতটা জরুরি সেটা রবীন্দ্রনাথ আর অরুণ মিত্রকে পড়লে বোঝা যায়। জীবনানন্দকেও। সমস্ত রকম প্রত্যক্ষ ছন্দ চর্চা করে তবে গদ্যে হাত দিয়েছেন।
এবার একটা বিপদ হয়েছে। গণতন্ত্রের বিপদের মতো আর কী! অনেকেই মনে করে নিলেন, আরে এই তো একদম যেরকম ভাবে কথা বলি, সেই রকম লেখা! তাহলে ছন্দ দরকার নেই। আরে বাঙালি অক্ষরবৃত্তে কথা বলে, প্রেম করার সময় যে বকবক করে তাতে পিলুঁ মিশে থাকে, মায়ের ভোরবেলার ডাকে দো তারার —গমক এটা না বুঝলে বাঙালির নিজস্ব ভাষাগত অবস্থানকেই অস্বীকার করতে হয়।ছন্দ আছে কিন্তু আমি তার ব্যবহার জানি না।ব্যাপারটা কীরকম নদী আছে কিন্তু জল নেই-এর মতো হয়ে যায় না কী!
যা বলছিলাম, বাঙালির ধারণা হলো এই কবিতা ছন্দহীন। ফলত শুরু হলো গদ্য কবিতার নামে ভুল বা কাটা অক্ষরবৃত্তের যথেচ্ছাচার।

বলছি না, অপ্রত্যক্ষ ছন্দে কোন‌ও উৎকৃষ্ট লেখা হয়নি। বলাটা পাপ। আমার সময়েও প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ ছন্দে ভীষণ জরুরি কিছু কবিতা রচিত হচ্ছে। সেসব নিয়ে নিয়মিত প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিও বিভিন্ন কাগজপত্রে। আসলে আমি একটা জায়মান প্রবণতার বিরুদ্ধে কথা বলছি।

কবিতা লিখতে গেলে ও অনেক দিন লিখতে গেলে সবরকম ছন্দ শিখতে হবে। তারপর নির্বাচন করতে হবে নিজস্বতা। 

'ছবির দেশে—কবিতার দেশে' ব‌ইয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, ফরাসি সুন্দরীরা সমস্ত রকম মেক আপ খুব পুরু করে চাপান। তারপর সবটা ধুয়ে ফেলেন। ঐ যেটুকু র‌ইল আবছা, জলের সরের মতো ওটুকুই তাঁর সে রাতের সাজ।

এই রকমই।

দিব্যক
ছোটবেলায় কি লেখালিখি করতেন?

সব্যসাচী মজুমদার
মোটামুটি সতেরো বছর বয়স থেকে।আঠেরো বছর বয়সে অনুষ্টুপে ছাপা হয়। তারপর.. আসলে বলতে গেলে সিরিয়াস হ‌ই তেইশের পর।বলা যায়,ওখান থেকেই শুরু।তার আগে লিখেছি। নিয়মিত লিখেছি। কিন্তু সেসব‌ই লেখা লেখা খেলা বলা যায়।

দিব্যক
লিখতে কেমন লাগে?

সব্যসাচী মজুমদার
এটা বলতে পারি না। মানে সত্যিই বুঝিনি। বুঝতে চেষ্টা করিনি বলা যায়। তবে খুব উত্তেজিত বোধ করি।আর না লিখলে স্বপ্ন দেখি। দুঃস্বপ্ন বলব না, দুঃসাহসিক স্বপ্ন‌ কেবল নয় সব রকম স্বপ্ন‌ই দেখিই। মনে থাকে কিছু কিছু। লিখলে দেখি না।

দিব্যক
আপনি কী ধরনের বই পড়তে পছন্দ করেন?

সব্যসাচী মজুমদার
মুড়ির ঠোঙা থেকে শ্লোগান-সব। যে ব‌ই আমাকে নতুন কিছু জানাচ্ছে —গোগ্রাসে পড়ি।হয়তো সব বুঝি না, শেষ‌ও করতে পারি না, শিক্ষার অভাবে। কিন্তু পড়ার চেষ্টা করি। 

দিব্যক
এখন কোন বইটা পড়ছেন?

সব্যসাচী মজুমদার
অনেক তরুণ কবির কাব্যগ্রন্থ, আমি বিনয় মজুমদার, সরস্বতীর ইতর সন্তান।

দিব্যক
আপনি বারবার পড়েন, এমন কবির নাম জানতে চাই।

সব্যসাচী মজুমদার
আমার পড়া সমস্ত কবির কাছেই বারবার ফিরে যাই। তবে আমার নিজের মানুষ শক্তি চট্টোপাধ্যায় আর আল মাহমুদ। দুজনকেই যেন বুঝতে পারি নিজের মতো করে। নিজের সবসময়ের মতো করে। জসিমউদ্দিন, কবীর সুমন এই আর‌ও দুটো নাম। আর জয় গোস্বামীর কবিতার সামনে একলব্য হয়ে থাকি।

দিব্যক
বর্তমান সময়ের কবিতার বিরুদ্ধে জনবিচ্ছিন্নতা ও দুর্বোধ্যতার অভিযোগ বিষয়ে  কিছু বলেন। কবি কি পাঠকের রুচির সাথে আপোষ করে কবিতা লেখা উচিত?

সব্যসাচী মজুমদার
কৈ কবিতা একদমই জনবিচ্ছিন্ন ও দুর্বোধ্য নয়। আমি তো টের পাই না। আজ পর্যন্ত একটাও দুর্বোধ্য 'কবিতা' পড়িনি। হ্যাঁ এটা ঠিক অজস্র কবিতার অভ্যাসকে মানে নেট প্রাকটিসকে যদি আপনি কবিতা বলে মনে করেন তবে তা আছে। একজন কবি রোজ‌ই সার্থক, আপনার তৎকালীন চাহিদা অনুযায়ী লেখা লিখতে পারবেন বা চাইবেন, তা তো নয়। যে লেখা আপনি বুঝতে পারছেন, আপনাকে স্পর্শ করছে, সেটাই আপনার কবিতা।যেটি স্পর্শ করছে না, তাকে দুর্বোধ্য না বলাই ভালো। হয়তো সে ভাষার বিন্যাস আপনি জানেন না। কিন্তু কাউকে না কাউকে বা অনেককে তা ছুঁতেই পারে। সে রুচিকে অস্বীকার করা যায় না। করলে নিজেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে হবে। জনরুচির বিভিন্নতাকে মান্যতা দিই। আর একটা কথা বলতেই হয়, কবিতাকে আপনার সিলেবাসের কবিতা পাঠের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝতে গেলে কিন্তু বিপদ। সমস্ত যুক্তির পরেও কবিতা কিন্তু একটা শূন্যতা তৈরি করে। একটা সা থেকে আর একটা সা-তে যাওয়ার নীরবতাটুকু কবিতা চায়। গতির নীরবতা। ওখানেই কবিতা থাকে।

আমি অন্তত একশো জন তরুণ কবির নাম করতে পারি, যাঁরা দু হাজার দশের পর লিখতে এসেছেন কিন্তু তাঁদের কবিতা অত্যন্ত জনসচেতন। তাঁরা বিভিন্ন অধঃপতনের বিরুদ্ধে লিখে গর্জে উঠছেন। এবং আবারও বলছি বাংলা কবিতার এই তরুণেরা মানচিত্র মানেন না, ভাষাকে মানেন।
ব্যারিকেড জারি আছে। থাকবেই।

দিব্যক
লেখা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে আন্তর্জালকে কীভাবে দেখছেন?

সব্যসাচী মজুমদার
ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্ভাব্য প্রধান মাধ্যম।

দিব্যক
আপনার কি বিশেষ ধরনের রাজনৈতিক বিশ্বাস আছে?

সব্যসাচী মজুমদার
একদম। আমি আদ্যন্ত কমিউনিস্ট হতে চাই।এটা একটা সারাজীবনের চর্চা। এর সঙ্গে ভোটের রাজনীতির কোন‌ও সম্পর্ক নেই। মার্ক্সিজমের সম্পর্ক আছে। কিন্তু সম্পর্ক‌ই‌। কমিউনিজম মানেই কিন্তু মার্ক্সসিজম নয়।

দিব্যক
আপনি কি এক বসায় কবিতা লেখেন, না কি বারবার সংশোধন করেন?

সব্যসাচী মজুমদার
এক এক সময় এক এক রকম হয়। কখন‌ও একবারেই। কখন‌ও কয়েক দিন দরকার হয়ে পড়ে।
তবে সংশোধনের ব্যাপারে বলতে পারি, সাধারণত চার মাসের আগে আমি কোন‌ও মাধ্যমেই লেখা প্রকাশ করি না। এমনকি কাগজে লেখা দেওয়ার পরেও সংশোধন করতে চেয়ে জ্বালাই। এ ক্ষেত্রে ভীষণ খুঁতখুঁতে। বিশেষ করে টানা হিন্দুস্তানি মার্গীয় সংগীত শোনার জন্য এটা আরও বেশি হয়েছে। কিছুতেই নিশ্চিত হতে পারি না।

দিব্যক
আপনার প্রেমের কবিতাগুলো কি কল্পনাসৃষ্ট না কি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতালব্ধ?

সব্যসাচী মজুমদার
দেখুন প্রেমের কবিতা বলে আলাদা কিছু হয় বলে বিশ্বাস করি না।
এবার যদি বলেন আমার লেখার ক্ষেত্রে সাধারণত অভিজ্ঞতা অতিক্রম করি না। আমার কল্পনা‌ও কিন্তু অভিজ্ঞতা থেকেই তৈরি হয়। সবার‌ই।

দিব্যক
আপনি দিনের কোন সময়টাতে লিখতে পছন্দ করেন? কোনো রুটিন আছে কি এ ব্যাপারে?

সব্যসাচী মজুমদার
এ ক্ষেত্রে আমার পছন্দ যদিও রাত। প্রধানত নির্জনতা আর মন দিয়ে গান শোনার অবকাশ।মনোযোগ বাড়ে। তবে আমি তো 'কবিতা' ভেবে লিখি না। আসলে দিনলিপি লিখি বিচিত্র ফর্মে। তাই লেখাটা যখন খুশি তাড়া করতেই পারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

7 মন্তব্যসমূহ

  1. অসাধারণ কথোপকথন। সব থেকে ভালো লেগেছে অভিজ্ঞতা থেকেই কল্পনা আসে এটা ধ্রুব সত্য

    উত্তরমুছুন
  2. অসাধারণ এই সাক্ষাৎকার। এত গভীর অনুধ্যান সব্যসাচীর স্থিতধী মেধার পক্ষেই সম্ভব। মুগ্ধ হলাম।

    উত্তরমুছুন
  3. চমৎকার সব্যদা

    উত্তরমুছুন
  4. মেহেদী হাবিব মেজর৩০ জুলাই, ২০২২ এ ৩:৫৭ PM

    খুবই ভাল লাগলো৷ স্টেট ফরোযার্ড বক্বব্য

    উত্তরমুছুন

অস্বাভাবিক মন্তব্যের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।