সজীব খন্দকার -এর কবিতা

আমি বেঁচে থাকবো

এমন একটা রাতের দোহাই দিয়ে আমি অসংখ্যবার এই পৃথিবীতে জন্ম নিবো।
আমি বেঁচে থাকবো
আমি বেঁচে থাকবো।
হাত ভিজিয়ে ভিজিয়ে তোমাকে প্রশান্তি দিতে কপালে ছুঁয়েছি শীতলতা।
নরম গালে ভেজা হাত আলতো ছোঁয়াতে ছোঁয়াতে মনে হলো-
তোমার খেয়ালে আর বেখেয়ালে লেগে যাওয়া অতীতের সমস্ত স্মৃতি চিহ্ন মুছে দেই এবং আমিই হয়ে উঠি প্রথম পুরুষ।
কিন্তু দুঃখ আর জলে কখনো স্মৃতি চিহ্ন মোছে না-
এই ভেবে শেষবার ফিরিয়ে নিয়েছি হাত।
তোমার ঘুম এবং শুকনো ঠোঁট দেখে আমার ভেতর একটা অপরাধ বড় হচ্ছিলো।
ইচ্ছে করছিলো একবার একটা বিশ্বাসের দেয়াল ভেঙ্গে  সোনালী ছুরির মত শুকনো ঠোঁটে বসিয়ে দেই মৃত্যুর মতন দীর্ঘ চুমু।
তোমাকে চুমু খেতে খেতে আমি আত্মহত্যা করবো,
তোমাকে চুমু খেতে খেতে আমি আবার জন্মাবো।
তোমার প্রেমের একান্ত দেয়ালিকা ছাপিয়ে দেবার জন্য আর কত ভালবাসবো, আর কত দুঃখ পাবো,আর কত ওই পথে হাটতে থাকবো?
তুমি রিক্সা থেকে নেমে যাবার পর আমার মনে হলো-
জীবন থেকে কবিতারা চলে যাচ্ছে,
ফুলগুলো ঝড়ে যাচ্ছে,পাখিরা হাহাকার করছে।
কিন্তু প্রিয়তমা,তোমার কোথাও যাবার ছিলো না।
তুমি ফুলের সুরভী হয়ে ছিলে,
পাখি হয়ে ডেকেছো।
শুধু আমিই তোমাকে ডাকতে পারি নি।
এত কিছুর দোহাই,নিয়মকানুন,দায় -অস্থিরতা আমার ভাল লাগে না।
প্লিজ এবার আমাকে জড়িয়ে ধরো।
আমি শরীর ছাড়িয়ে তোমার আত্মার ভেতর একটা বরফ শীতল হাওয়া হয়ে ছড়িয়ে পড়ি।
প্লিজ এবার চলো পরস্পরকে চুম্বন করি।
কালো টিপে সাজানো কপালে হাত বুলিয়ে বড্ড আফসোস হচ্ছিলো-
এমন প্রশস্থ কপালে আমার নামের কোনো অক্ষর নেই,
আমার কোনো শব্দ নেই।
তোমার চুলে যেই ফুলের ঘ্রাণ পেয়েছি এই রাত্রিতে-
আমি তার নাম জানিনা এবং পৃথিবীতে কোনোদিন চিহ্নিত করতে পারবো না।
এমন করে অজান্তে তোমার চুলের গন্ধ নেয়া আমার অপরাধ নয়-অধিকারও নয়।
কিন্তু আজ রাত্তিরে একটি চুমুর অধিকারের জন্য কী ভীষণ মরিয়া হয়ে উঠেছি!
যেহেতু আমার নিঃশ্বাস সে কথা বলতে পারেনি-
তাই ঘাসের অশ্রু ভেজা তোমার পা আমার বুকের কাছে একবার টেনে নিয়েছি।
আমার বুকের ভেতর হৃদয় আর হৃদয়ের বুক- ঠিক মাঝখানে ছোঁয়াতে চেয়েছি তোমার বৃদ্ধাঙ্গুল।
প্লিজ এবার একটা চুম্বনের অধিকার দাও।
তোমাকে চুমু খেতে খেতে আমি আত্মহত্যা করবো,
তোমাকে চুমু খেতে খেতে আমি আবার জন্মাবো।
এমন একটি রাতের দোহাই দিয়ে আমি অসংখ্যবার জন্মাবো।
আমি বেঁচে থাকবো
আমি বেঁচে থাকবো।