....

পাণ্ডুলিপি থেকে : সাজঘরে ক্রীতদাস / মাহমুদ আল হেলাল উজ্জামান


ঠিকানা বাংলাদেশ

হাজার চা'রেক বছর আগে লেখা শুরু যে কবিতার
সে কবিতা বাংলা মায়ের স্বাধীন বাংলার । 
ইতিহাস বলে হাজার চারেক বছর গিয়েছে কেটে
বাঙ্গালী জাতির পত্তন থেকে ভাষার বিকাশে,
প্রাচীন জনপদে অধিকার চেয়ে ভূমিতে দিয়েছে ‘আল’
প্রত্যয় যোগে বঙ্গসন্তান হয়ে ওঠে বাঙ্গাল।

পুন্ড্র, রাঢ়, গৌড় সমতট প্রাচীন জনপদে
মিশেল ভাষার মুক্তি চেয়েছে বাঙ্গাল পথে পথে
কথ্যরূপ দিয়ে মুখের ভাষা গড়েছে বাঙ্গালা রূপে
শতাব্দীর পর শতাব্দী ভুগে সপ্তম শতাব্দীতে।

বাঙ্গালী জাতির প্রথম রাজা-গোপাল ছিলেন নির্বাচিত
সাতশ’ চল্লিশ থেকে নব্বই অবধি পঞ্চাশ বছরের মত,
দেব, পাল, সেন, বর্মণ আর চন্দ্র বংশ
কাল ক্রমে নরপতি হয় ভিন্ন রাজার বংশ।

বাঙ্গালী কৃষক প্রথম বিদ্রোহ করে হাজার ছিয়াশি সালে
অত্যাচারী রাজা প্রমাদগনে দ্বিতীয় মহীপালে,
ইতিহাস বলে মধ্যযুগে আসেন খলজী বখতিয়ার
মুসলমানের হাতে চলে যায় সিংহাসন বাংলার
প্রথম স্বাধীন সুলতান ছিলেন গিয়াসউদ্দিন আইওয়াজ
দিল্লী থেকে মুক্ত বাংলায় আনেন স্বাধীন স্বরাজ
শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ আসেন বাদশাহ উপাধি নিয়ে।
নতুন অধ্যায় সূচিত হয় তেরশো বিয়াল্লিশে
ইলিয়াস শাহী বংশের পর এলেন হুসেইন শাহ
তাড়িয়ে দিলেন বিদেশী হাবসী আমীর ওমরাহ
সতেরোশ’ সাতান্নবধি আরো দুইশো বছর
শাসন করেছে বাংলার মাটি কররাণী আর মোগল।
সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ে বাংলার সূর্য অস্ত যায়
ব্রিটিশ শোষক ইংরেজ জাতি ক্ষমতায় আসীন হয়,
বাঙলা আর বাঙলা থাকে না বেঙ্গল নাম হয়
উনিশশ’ পাঁচের বঙ্গভঙ্গে (নতুন প্রদেশ) পূর্ব বাংলা হয়।
ক্ষুদিরাম, দুদু, সূর্য্যসেন আর তিতুমীরের পথ ধরে
ব্রিটিশ তাড়াতে প্রতিরোধ দূর্গ গড়ে ওঠে ঘরে ঘরে
হাল ছেড়ে দেয় ব্রিটিশ শোষক উনিশশ’ সাতচল্লিশে
ভারতবর্ষ ভাগ হয়ে যায় ধর্মের ভিত্তিতে।
ধর্মের খোলসে আলাদা জাতির পায় না কো সম্মান
বাঙ্গালী জাতির আবাসস্থল পূর্ব পাকিস্তান। এবার
ধর্ম শোষক দু’হাত বাড়ায় মাতৃভাষার বুকে
বাহান্নতে ফিরে আসে হাত রফিক-শফিকের রক্ত মেখে
রক্তে লেখা বাংলা ভাষা আর একুশে ফেব্রুয়ারী
বিশ্ব মায়ের ভাষার দাবি আজ মুক্তির রণভেরী।

বাঙ্গালীর শ্রম বাঙ্গালীর ঘামে এ মাটির ফলা সোনা
সবকিছু ওরা নেয় পশ্চিমে, নেই বাঙ্গালীর মালিকানা
পথে কাঁদে মানবতা, ছিন্নবস্ত্রা মা আর পদে পদে লাঞ্চনা
যেন ক্রীতদাসের সেই আদিম জীবন বাঙ্গালীর পাওনা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এর ডাকে ফের পথে নামে লক্ষ কোটি প্রাণ
বুকের রক্তে রাজপথ লাল ডুবে যায় শত্রুর কামান
ত্রিশ লক্ষ শহীদের খুনি শোষক বাঁচায় আপন প্রাণ
মুক্ত স্বাধীন রাষ্ট্রে বাঙ্গালী গায় ফের জয়গান
পৃথিবীর বুকে শস্য শ্যামল সবুজ সোনার দেশ
গড়েছে বাঙ্গালী একাত্তরে ঠিকানা বাংলাদেশ।

১৮.০২.২০০০





উত্তরের পংক্তি

নদী দেখতে এলে বন্ধু? নদী!
চলো হেঁটে যাই অনকেদূর, এই হলো তপ্ত বালুচর -সুর্য্য যেখানে 
দ্বীধাহীন ভালবাসায় উম্মত্ত। দূরপানে তাকালে মনে
ভেবে রেখো তিন সরল সত্য—
— আগুন বিছানো পদতল সবুজ শ্যামলীমার অতীত,
— ফুল-ফল ফসলহীন অনাবাদী বিরান মরুভূমি কিংবা
করালগ্রাসী বন্যায় ধ্বংসপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর প্রত্নত্বত্ত্বেরঅগ্নস্ফিুলঙ্গি
মন ভেঙে গেলো বুঝি! তবে উত্তরে তাকাও—
আমাদের মানচিত্রের উত্তরাংশের আদলে জেগে 
উঠেছে দ্বীপ।
কী দেখেছো— না ওটা ঝাউগাছ নয়!
উত্তরবঙ্গের বাসন্তী, আমাদের মা।
কখনো জালপড়া কিংবা এক পেচা ছেড়া কম্বলের
ফাঁক গলানো চুপসে যাওয়া স্তনের করুণ রূপবতী
সেই নারী- যাকে দেখে থাকবে সংবাদপত্রে নয়তো
চ্যানলেরে স্ক্রীনে।
যেখানে বসে আছে সেখানেই সব ছিলো তার
স্বামী-সন্তান গরু-ছাগল সাজানো ঘর দুয়ার
সেবারের বন্যায়— মুহূর্তেই শুরু নিমিষেই সব কিছুর ইতি!
কোলের সন্তানটাকে আঁচলে বাঁধতে পেয়েছিলো কোন মতেরাখতে পারেনি! 
নাড়ীর বাঁধন ছিড়েছে যার
একপেচা শাড়ীর বাঁধনে রুখিবে সাধ্য কার!
প্রাণে বেঁচে গেছে মা, তারপর শুধু অপক্ষো!
ইদানীং কী করেজেনেছে যেনো
আমাদের গোপন কথাগুলো।
খনা'র মত একাকী বলে যায় নিজের ভাষায়,
‘বাসন্তীর সংখ্যা বাড়বে দিনে দিনে
চুক্তির জল পাবে মহাপ্লাবনে' , কি়ংবা
‘বাঁধের আশায় ঘর বেঁধোনা বানে ভেসে যাবে
বাঁধের সমান বরাদ্দ হলেও বালির সে বাঁধ হবে'।
আজ আর কিছু নেই বাসন্তীর— উত্তরবঙ্গের মতো
এমনকি স্মৃতিও! এখন শুধু বসে থাকা বিচ্ছিন্ন কবিতার
পংক্তির মতো অথবা আরেকটি বন্যার অপক্ষোয়—
ঘূর্ণিপাকে পড়ে যদি পৌঁছে যেতে পারে যদি 
খিজির (আঃ) এর দুয়ারে!

১০.০২.২০০৮




সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে জানালায়

অলস দুপুরে আলসে ভাঙ্গা
মানুষগুলো
গা এলিয়ে দিচ্ছে না বিছানায়
সদ্য বখে যাওয়া মেয়েটা
পাড়ার বখাটে ছেলেটা
মিলিত হওয়ার কোন অজুহাত খুঁজছে না

প্রতিদিন মুয়াজ্জিনের আহবান
ভ্রক্ষেপ করা মানুষটা
মসজিদে যেতে চাইছে বার-বার
দুয়ার বন্ধ কাবার

ঘন্টার পর ঘন্টা প্রচারও
টক অব দ্যা টাউন হচ্ছে না নতুন কোন খবর
ম্লান হয়ে গেছে উৎসব, মহোৎসব
জন্ম হচ্ছে না যেন,
মৃত্যুও থেমে গেছে স্বাভাবিক
খেয়ে আছে, না খেয়ে কেউ ত্রাণের অপেক্ষায়! 

সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে জানালায় নিস্পলক
সবাই— দূরে কেউ বা উর্ধ্বাকাশ পাণে
খুউব খারাপ কি কিছু —আগামী সকাল

বেঁচে ফিরবে কি —মৃত্যুভয়, কেটে যাবে অতিভয়
সৎকারহীন মৃত্যুর মিছিল কত দীর্ঘ
মানবহীন পৃথিবীতে কি লাভ কার
নিশ্চয়ই রহমত বর্ষিত হবে পৃথিবী স্রষ্টার। 

করোনাকাল, ১০-০৪-২০২০



তবে আমি পাপি

‘যেখানে নদীর স্রোত ঘন মাটিতে বাঁধা পায়,
সেখানেই বাঁক নেয় নদী’

নদী ও নারী যদি ভিন্ন না হয়
তবে তুমিও স্ত্রোতধারা,
কখনো বাঁক নেবে কি তোমার মন
ফিরে আসবে কি বিস্মৃত পথে
যেখানে থমকে আছি সরলতার আচ্ছাদনে ।

আজো ভাবি দুষ্টুমির ছল
কিংবা আরো জীবনময়
হতে লুকোচুরি তোমার ।
অনেক ব্যথা কিংবা সুখের সংলাপ বুকে
অন্য পথে আসবে কি ক্লান্ত সাথী!

আমি এখনো সেথায়,
জীবনের ঘন মাটির আস্তরণে সৃষ্ট
                মরাগাঙ!

ঐ দুরের মসজিদে ভেসে আসে আজান
সৃষ্টিকর্তার কথা মনে পড়ে। সময়ে অসময়ে
এই মন ডাকে না তাকে; তোমাকেই শুধু....
এ যদি পাপ হয়, তবে আমি পাপী
তোমাকে খুঁজে ফেরার অপরাধে ।

মুক্ত হবো কি এ পাপ থেকে
আসবে কি তুমি আমায় মুক্তি দিতে
কষ্ট থেকে,পাপ থেকে
মরা গাঙে স্রোতস্বিনী হতে ! 

১৪.০২.২০০২




শুধু তোর

তোর বাগানের অপরাজিতা 
হবো আমি। কষ্ট দিলে
হবো নীল, আর যদি সুখ পাই
তবে হবো সফেদ বর্ণিল।

তোর বাগানে ঠাঁই পেতে যদি
অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয়, তবে
তোর শহরের ভাড়াটিয়া হবো আমি।
তোর ঝুল বারান্দায়
হৃদয়ের লনে- থাকে যদি এতটুকু ঠাঁই
দ্বিগুণ-চারগুণ মুল্যে কিনে নিয়ে
সেথায় বাস করবো আমি।

পথে হেঁটে যেতে-যেতে, বৃষ্টিতে ভিজে
তোর অলস সময় খুঁজে নেবো-
অসময়ের নিদারুণ কষ্টে তোর কন্ঠ থেকে
ভেসে আসে যদি বিরহের কোন
সুর- আমি মনের মাধুরি মেশাবো তাতে

সে মদিরা পান করে তুই যদি
ভুল করে নতুন কোনো কবিতা লিখিস
আমি তার শব্দ হবো- অক্ষরবৃত্ত
মাত্রাবৃত্ত, স্বরবৃত্তের প্রয়োজনে
নিজেকে ভেঙ্গে নতুন শব্দের
র্অথ হবো আমি। একান্ত নিজের
যে শব্দ -শুধু তোর।

১৫.০৬.২০১৯





কথোপকথন

— তারপর
— না, তার আর পর নেই
— সত্যি তাই কি!

তোমার বুঝি যুবক হয়ে ওঠা হয়নি
বিবাহ
ফুলশয্যা
মাঝ বয়সী ভাবগম্ভীর গৃহকর্তা।

— আর ক'দনি পর আরকেবার এসো
— কতদিন পর
— মৃত্যুর পরে এসো

মৃত্যুর পর সব সত্য কথার প্রকাশ ঘটে
মিশেল সত্য নিয়ে তোমায় আর ভাবতে হবে না তখন
কেটে যাবে ত্রিশ বছরের সংশয় ।

১৪.০৫.২০২০





ফটোমেকার

তুমি আর একটিবার হেটে এসো
গলিপথ ধরে
ক্যামরা ছেড়ে অন্তদৃষ্টি দিয়ে তাকাও,
জয়নুল'র মন্বন্তর এর চেয়ে 
ভয়াবহ দৃশ্য সৃষ্টির 
পটভূমি দেখবে এখানে ওখানে।

কাশ্মীর'র লকডাউন এখন সারা বিশ্বজুড়ে!

হাড় জির-জিরে বুভুক্ষু মানুষের ছবি তুলতে
সোমালয়িায় যেতে হবে না তোমায়
আমরা সবাই এগিয়ে চলেছি
অকাল মৃত্যুর পথে।
দৈবাৎ বেঁঁচে যাওয়া মানুষগুলো
হবে তোমার
ক্যামেরার ক্লিক।

করোনাকাল, ১৭.০৪.২০২০





ভেবেছি— মাটিই আমার মা

আমাকে তোমরা হাসপাতালে নিয়ে
বাঁচানোর ব্যর্থ চেষ্টা করো না!
মৃত্যুর পরেও আমি তোমাদের মিছিলে যাবো না।
আমি কোন পাটি’র বা দলের নই
শব দখলের লড়াইয়ে আর রক্ত ঝরিও না।

আমার নিরীহতা অলক্ষ্যে রেখে
‘সন্ত্রাসীর হাতে সন্ত্রাসী নিহত’
এমন খবর প্রকাশিত হলেও
শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগে ভূ-লুন্ঠিত থেকে
বাবার ঠিকানা খুঁজতে দাও!
আমি বাবার কাছে যেতে চাই,
বাবা আমি তোমার কাছে যেতে চাই,
দেশ মাতৃকার মুক্তি কিংবা
তোমার আত্মত্যাগে পাওয়া
স্বাধীন দেশটার ভাগ্যহত মানুষের
শুভ আনন্দের বারতা নিয়ে নয় 
আমার জন্ম থেকে মৃত্যুবধি
দুঃসহ সময়ের গল্প শোনাতে।

আমার শিশুমুখে প্রথম বাবা ডাক শুনেই না-কি যুদ্ধে গিয়েছিলে,
স্বাধীনতার সুর্য্যােদয় লগ্নে
আহত তোমার সন্ধান দেবে বলে ও-রা মাকে নিয়েছিলো,
তুমি আসোনি নিরব নিথর দেহে মা ফিরে ছিলো
বীভৎস স্তনে দুগ্ধের প্রবাহে খুন নিয়ে!

অবুঝ আমি তৃষ্ণার্ত মুখে
হয়তো দু’ফোটা পান করেছিলাম।
কে যেনো দয়া করে-তোমার সন্তান পরিচয়ে
এতিমালয়ে দিয়েছিলো আমায়, তার দেয়া পরিচয়ে
অনেক খুঁজেছি আপন কাউকে, পাইনি! 
আসোনি তোমরা-কেউ আসেনি!

ওরা মায়ের নাম জানতো না, আমিও জানি নি
ভেবেছি- মাটিই আমার মা।
রক্তের ঋন শোধরানো যায় না, বাবা!

জন্মভূমি মায়ের ডাকে-তোমার দেয়া তাজা রক্তেও
জন্মের ঋন শোধ হয়নি আমার,
আমার রঞ্জিত লাশ-সেই ঋণ শুধছে!
দুঃখ শুধু
অবমুক্ত ভূমিতে তোমার দেহ ঝাঁঝড়া হয়েছিলো
শত্রুর বুলেটে, আর আমার
স্বাধীন স্বদেশী ভাইদের হাতে!

জানো বাবা-ওরা আত্মস্বীকৃত গনতন্ত্রী যোদ্ধা,
প্রতিবাদী রক্তের
হোলি-খেলার মন্ত্রে উজ্জীবিত। ওরা
স্বার্থসিদ্ধিতে ভুলে গেছে মা-ভাই বোনের পরিচয়!

আমি ফুল চাই না-ওদের কাছে
ওরা-তোমাদের বেদীতেও পেশীশক্তিতে লিপ্ত হয়
পুস্পাঞ্জলি দিবসে।
উহ্, ডক্টর প্লিজ!
আর একটি বুলেটও বের করো না আমার দেহ থেকে
স্বাধীন দেশে-কোন অপবিত্র বুলেটে ঝাঝড়া হয়
সম্ভাবনাময় তাজা প্রাণ-আমি বাবাকে দেখাবো!

বাবা আসবে, আমিও আসবো পুর্ণজন্মে
রক্ত পতাকা হাতে সবুজ ভূমিতে
বিদেশী আর স্বদেশী শক্রর ধ্বংসযজ্ঞে,
রক্তে ভেজা মুক্ত সবুজে
নতুন পতাকা উড়াতে।

৪ঠা মার্চ ১৯৯৭



আবার আসতে যদি

বাবা, আবার আসতে যদি!
ডান হাতের শাহাদত আঙ্গুলিটি
আবার বাড়িয়ে দিতে যদি
ধুলোমাখা শরীরে আবার উঠে দাঁড়াতাম
হাটতাম বিস্তীর্ন সবুজ মাঠে; জীবনের
ইট বিছানো অসমতল, জলমগ্ন, উঁচুনীচু
মেঠোপথ আমাকে আর হোঁচট দিয়ে
মুখ থুবড়ে ফেলে দেয়ার দুঃসাহস
দেখাতো না, তবুও পড়ে গেলে-
তোমার হাসিমাখা মুখে
উঠে দাড়াবার প্রেরণা-আমাকে
দ্বিগ্বিজয়ীর সাহস যোগাতো নতুন করে।

বাবা, আবার আসতে যদি!
শত ব্যস্ততার মাঝেও তোমার সমুখে
হাজিরা দিয়ে কান ধরে উঠবস করতাম
সেই ছোট্ট ছেলেটির মতো
ক্ষমা চেয়ে নিতাম অজান্তে কোন অবহেলার
বায়না করতাম; কাঁদতাম,
বলতাম - বাবা
আমার বড় ভয় করে! খুব কাছের
মানুষ গুলোর প্রতিহিংসা দেখে ।
একটা কিছু তো বলতে,না হয় বুকে
জড়িয়ে ধরতে,সান্তনা দিতে।

আজ আর কেউ নেই! কাছের; দূরের!
দৃশ্যমান আছে কেউ কেউ, তারা
অতি কাছের সম্পদের ! হা-হা কার ভরা
বুকটা নিঃস্বার্থে জড়িয়ে ধরার কেউ নেই
বাবা।
আবার আসতে যদি!

আমিও বাবা হয়েছি ,
হতে পারিনি নির্ভরতা,আশ্রয়স্থল!
ইদানীং সন্তানদের নির্ভরতার বিশ্লেষণ ভিন্ন,বাবা
আশ্রয়স্থল তাদের অট্টালিকা।
স্বাধীনতার পরে এতিম শিশুদের
ভীড় দেখেছি এতিমালয়ে
আজ বৃদ্ধদের-বৃদ্ধাশ্রমে!
ভালোবাসাও স্বাধীন হয়েছে যেনো
বছরে শুধু একদিন-মা দিবস,বাবা দিবস
ভালোবাসা দিবস!
জন্ম-জন্মান্তরের ভালোবাসার ঋন শোধ হয়
একটু টুকরো কেক আর একটি ফুলে !
বছর ঘুরে আবার সেই মহেন্দ্রক্ষণ’র
অপেক্ষায় থেকে
চোখের শেষ আলোটুকু গলে গলে
নিভে যায়-জীবনের প্রদীপ! 
পরিজনহীন জীবনের
সমাপ্তি ঘটে-বেওয়ারিশ দাফনে!!
বাবা, আবার আসতে যদি!

ভালো মন্দ কিছু একটা খেতে বসলে
বার -বার আড় চোখে তাকিয়ে দেখি
এই বুঝি অন্যদের লুকিয়ে আমার
থালায় কিছু একটা রেখে দিলে,
শুন্য থেকে যায় প্রতিদিন, শুধু
দু’চোখ ভিজে যায় শুন্যতায়, কান্নায়।
মনে হয় রাজ্যের সব ভালো খাবারগুলো
তোমার থালায় সাজিয়ে রাখি, তুমি
চুপিসারে, একটু একটু করে
চালান করে দাও আমায়, থালা ভরে
উপচে পড়ুক - আমি শুধু তোমার
মুখপানে তাকিয়ে মুচকি হাসিটুকু দেখি
তৃপ্তির, সুখের, একান্ত আপন পরিজনের।
বাবা, আবার আসতে যদি !!
আবার আসতে যদি!

২৭.০২.২০১৮

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

6 মন্তব্যসমূহ

  1. খুব একটা ভালো লাগলো না। দুঃখিত।

    উত্তরমুছুন
  2. এই আপনার কবিতা? হুদাহুদি সময় নস্ট৷ আপনার সাইটের অন্য সেখা পড়ার রুচি শেষ৷ বিদায়

    উত্তরমুছুন
  3. সম্পূর্ণ পড়তে পারি নি। তবে স্ক্রল করে করে দেখলাম। নিজেকে এখন চান্দু চান্দু মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ সম্পাদক, আমাকে অপমান করার জন্য। আমার আজকে এটাই প্রাপ্য ছিল।

    উত্তরমুছুন
  4. ভাল লাগল না। মনে হচ্ছে কবিতা হয় নি। শুধু লেখার জন্য লেখা হয়েছে।

    উত্তরমুছুন
  5. মিজান মোল্লা১ মার্চ, ২০২১ এ ৮:৫৩ AM

    মিস্টি কবিতা। দারুণ লাগল। এগিয়ে চলুন কবি। আমার দোয়া রইল। সম্পাদকের জন্যেও থাকলে অনেক অনেক দোয়া।

    উত্তরমুছুন
  6. এই মন্তব্যটি একটি ব্লগ প্রশাসক দ্বারা মুছে ফেলা হয়েছে।

    উত্তরমুছুন

অস্বাভাবিক মন্তব্যের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।